খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুলনা সদর থানার এসআই খালিদ উদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, শুক্রবার রাতেই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১২০০/১৩০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ও আসামিদের নাম হল- খালিশপুর থানার আলমনগর এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে সোহেল রানা (২০), ২৬নং ওয়ার্ড ওয়ার্লেস ক্রস রোড এলাকার আহমেদ হোসেন গাজীর ছেলে গাজী সালাউদ্দীন (৪২), রুপসা থানার দেয়াড়া এলাকার মোঃ আজিজুর রহমানের ছেলে মোঃ আতাউর রহমান (৪৮), আইচগাতী এলাকার মৃত মখলেছুর রহমানের ছেলে মোঃ সেকেন্দার শেখ (৬০), বটিয়াঘাটা থানার বাড়োয়াড়িয়া এলাকার মৃত আলতাফ মোল্যার ছেলে মোঃ শাইখুল মোল্যা (৩৪), লবনচরা থানার হরিনটানা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে মোঃ ওয়াহিদ শেখ (৩২), দাকোপ থানার খেজুরিয়া এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে মোঃ রাসেল (২৪), সোনাডাঙ্গা থানার বানরগাতী ইসলাম কমিশনার মোড় এলাকার আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে রাব্বি চৌধুরী (২৯), দাকোপ থানার গুনারী এলাকার আঃ সালাম গাজীর ছেলে মাহবুব গাজী (২৬), রুপসা থানার আইচগাতী এলাকার আব্দুল আজিম উদ্দিন শেখের ছেলে মনিরুজ্জামান মামুন (৪২), সোনাডাঙ্গা থানার ট্রাক স্ট্যান্ড, আব্দুল গনি সড়ক এলাকার আব্দুল জলিল শেখের ছেলে মোঃ রাজু শেখ (৪১), নগরীর নতুন বাজার ওয়াপদা ভেরীবাধ রোড এলাকার মৃত মোঃ আব্দুল মান্নানের ছেলে মোঃ আলিফ মিলন (৩১) এবং নতুন বাজার খ্রিষ্টানগলি এলাকার মোঃ আউয়ালের ছেলে মোঃ রাসেল (২৭)।
এছাড়াও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা অন্যান্য আসামিরা হলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, মাহবুব হাসান পিয়ারু, মো. ইশতিয়াক আহমেদ ইস্তি, কে এম হুমায়ুন কবীর, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মো. মাসুদ পারভেজ বাবু, হেলাল আহম্মেদ সুমন, একরামুল হক হেলাল, মো. নাজমুল হুদা চৌধুরি সাগর, এবাদুল হক রুবায়েত, চৌধুরী হাসানুর রশীদ মিরাজ, কিমিয়া সাদাত, শেখ সাদী, মো. ফরিদ মোল্ল্যা, গাউস, মো. রবি, মো. জামাল, মো. নাছিম, মো. বেলায়েত শেখ, শেখ সাইফুল্লাহ, মো. সোহেল শেখ, খান জুলফিকার আলী জুলু, মফিজুর রহমান, মো. জিয়াউর রহমান জিয়া, মো. তাজিম বিশ্বাস, আসাদুজ্জামান মিঠু, হাফিজুর রহমান মনি, মো. জাবেদ, খন্দকার হাসানুল ইসলাম নিক, শফিকুল ইসলাম শফি, আবু হোসেন বাবু, শেখ মো. আব্দুল্লাহেল কাফি শখা ও আল আমিন ওরফে সজল।
জানা যায়, শুক্রবার (১৯ মে) বিকেলে সরকারের পদত্যাগ, মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধসহ ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ আহ্বান করে বিএনপি। বিকেলে প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হয়। আগে থেকেই সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রাইভেটকারে করে ক্লাবের সামনে আসেন। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকে। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। অপরদিকে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, সমাবেশে আমাদের উপর হামলা করা হয়েছে। বক্তব্য দিতে দেয়নি। উল্টো আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। হামলা-মামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করা যাবে না।
খুলনা গেজেট/এমএম/এনএম