খুলনায় বিএনপির ১৬ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) স্বেচ্ছায় তারা পদত্যাগ করেন। খালিশপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন দলের নগর শাখার সাবেক কোষাধ্যক্ষ এসএম আরিফুর রহমান মিঠু।
দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসএম আরিফুর রহমান মিঠু উল্লেখ করেন, দলের মূল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমি মহানগরের কোষাধ্যক্ষ ও খালিশপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দুটি পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।
এদিকে খুলনা মহানগরীর ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। এরা হলেন- ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমকেএ তরিকুল্লাহ্, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ কামাল টিটো, সদস্য মো. সামছুল আলম খান, মো. তারিকুল আলম, সাহেব আলী, মো. নজরুল ইসলাম নান্না, মো. রফিক, মো. ফজলুর রহমান, জাহাঙ্গীর মল্লিক, মো. বেলাল তালুকদার, এসএম শাহাব উদ্দিন, মো. আবুল বাশার ও কবির আহমেদ।
নগরীর ২২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমকেএ তারিকুল্লাহ বলেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানার পর তাৎক্ষণিক আমি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে অসম্মান ও অমর্যাদাকর পদক্ষেপ এবং সারাদেশে বিএনপির কমিটি গঠনের হাল-হকিকত দেখে আমরা বর্তমান দলের সিদ্ধান্তে আস্থা রাখতে পারছি না বিধায় পদত্যাগ করেছি।
অপরদিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক ফোরামের ১ম যুগ্ম-আহ্বায়ক সারুজ্জামান মুকুল পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
মহানগর বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এসএম আরিফুর রহমান মিঠু বলেন, খুলনায় একজনকে প্রতিষ্ঠিত করতেই ত্যাগী ও সংগ্রামী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া আমার কাছে ভালো লাগেনি, যে কারণে আমি স্বেচ্ছায় দলের খালিশপুর থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।
তিনি বলেন, দলের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগী নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা আমাদের হতাশ করেছে। কয়েকদিন আগে তাকে পুলিশ মেরেছে, তিনি জেল খেটেছেন। রক্তের দাগ শুকানোর আগে এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন?
কাউকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে অন্যায় কাজগুলো হচ্ছে এটা কখনো মানি না, মানবও না।
নিজের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে এসএম আরিফুর রহমান মিঠু বলেন, রক্তের সঙ্গে রাজনীতি। আমি রাজনীতি করব। রাজনীতিতে এক বিন্দুও ছাড় দিব না। আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে আমরা রাজনীতি করব। কেউ করুক আর না করুক আমি প্রতিবাদ করে যাব। তারই ধারাবাহিকতা থেকে আমার পদত্যাগ। বর্তমানে বিএনপির যে রাজনীতি হচ্ছে সেখান থেকে সরে আসছি, ভবিষ্যতে যোগ্য নেতাদের আনলে তখন রাজনীতি করব।
প্রসঙ্গত, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) পদ থেকে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর জায়গায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।