খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন
  ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি মোকাম্মেল ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
  সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৩ বিচারপতি শপথ নিয়েছেন
  এনআইডির তথ্য ফাঁসের ঘটনায় সজীব ওয়াজেদ জয় ও জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কাফরুল থানায় মামলা
পাল্টে যাবে গল্লামারী থেকে জিরোপয়েন্টের দৃশ্যপট

খুলনার শেরে বাংলা রোড চারলেন প্রকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ওয়াকওয়ে, সার্ভিসরোড ও ফুটওভার ব্রিজ অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন মহানগরী খুলনার ময়লাপোতা থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ অংশের গল্লামারী-জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত এক কিলোমিটার উভয়পাশে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, সার্ভিস রোড এবং একটি ফুটওভারব্রিজ অন্তর্ভূক্তির জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান স্বাক্ষরিত অনুরোধ পত্রে উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, এই প্রকল্পেরই অন্তর্ভূক্ত গল্লামারী থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং গল্লামারীতে নির্মিত মহান স্বাধীনতার স্মৃতিসৌধটিও এই মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। জিরোপয়েন্ট হলো খুলনার পশ্চিমাংশের প্রবেশ দ্বার। সেখান থেকে গল্লামারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতহাজার শিক্ষার্থী ও সহ¯্রাধিক শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারি এবং হাজার হাজার সাধারণ মানুষ খুলনা শহরে প্রবেশের আগে মহাসড়কের এ অংশ ব্যবহার করেন। নানা ধরনের অসংখ্য যানবাহনও এ মহাসড়কে চলাচল করে। ফলে ব্যস্ততম এ মহাসড়কটির জিরোপয়েন্ট থেকে গল্লামারী এক কিলোমিটার চারলেন করার পাশাপাশি এর উভয় পাশে সার্ভিস রোডসহ দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেটের আশপাশে শিক্ষার্থী ও সাধারণের নিরাপদ পারাপারের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজের অত্যন্ত প্রয়োজন। এ ব্যাপারে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ডিটেইল্ড এরিয়া ডেভলপমেন্ট প্লানেও (ডিএডিপি) বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ২০১০ সালে মন্ত্রণালয়ে প্রদানকৃত অনুরোধপত্রে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত গল্লামারী থেকে জিরোপয়েন্ট এক কিলোমিটার অংশের নাম শহিদ সরণি এবং একই সাথে এখানে স্থাপিত মহান স্বাধীনতার স্মৃতিসৌধ ও সংলগ্ন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণের যাতায়াত সুবিধায় উভয় পার্শ্বে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিলো। কিন্তু বর্তমান অনুমোদিত চারলেন সড়ক প্রকল্পে এই এক কিলোমিটার অংশে প্রস্তাবিত ওয়াকওয়ে অন্তর্ভূক্ত হয়নি।

পত্রে আরও উল্লেখ করা হয় ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর খুলনা সফরকালে শহিদ হাদিস পার্কে এক অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ প্রস্তাবসহ একটি ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বর্তমান উপাচার্য তাঁর নিকট হস্তান্তর করেন। এ সময় মন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ অংশে প্রস্তাবিত এ ওয়াকওয়ে করে দেওয়ার ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বর্তমানে প্রকল্পটির সংশোধিত প্রস্তাব প্রণয়ন করার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় মন্ত্রীর নিকট ঐ সংশোধিত প্রকল্পে গল্লামারী থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশের উভয়পাশে সার্ভিস রোডসহ দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেটের আশপাশে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ কাজ অন্তর্ভূক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারি এবং সাধারণ মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিষয়টি অবহিত করে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকেও উপাচার্য পত্র দিয়েছেন বলে জানা যায়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় মেয়র বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ প্রস্তাব অন্তর্ভূক্তির জন্য তাঁর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীকে জোরালো সুপারিশ করেছেন। ২০১০ সাল থেকেই কেসিসি মেয়র এ ব্যাপারে একান্ত আগ্রহের সাথে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।

জানা যায় বিষয়টি খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) প্রধান প্রকৌশলী, কেডিএর চেয়ারম্যান, খুলনা জেলা প্রশাসক, সওজ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকেও বিষয়টি অবহিত করে পত্র দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান নিশ্চিত করেন। পত্রের সাথে একটি দৃষ্টি নন্দন থিম্যাটিক ডিজাইনও দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশের প্রায় দেড়শ ফিট চওড়া সড়কের প্রতি দুই লেনে ত্রিশ ফিট করে ষাট ফিট প্রশস্ততা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। মাঝখানে দশ ফুট আইল্যান্ড, উভয় পাশে পনের ফিট করে সার্ভিস রোড রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সার্ভিস রোড দিয়ে রিক্সা-ভ্যানসহ নন-মোটরাইজড ভেইক্যাল চলার সুযোগ থাকবে। ফলে মূল চারলেন সড়কে দুর্ঘটনার আশংকা থাকবে না।

এছাড়া দশ ফুট প্রশস্ত মাস্টার ড্রেনসহ দৃষ্টি নন্দন ওয়াকওয়ের দৃশ্য রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা পারাপারের জন্য একটি ফুটওভার ব্রিজের দৃশ্য রয়েছে। সড়কের আইল্যান্ড দশ ফুট প্রশস্ত রাখা এবং সার্ভিস রোড পনের ফিট রাখার যৌক্তিকতা হচ্ছে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি যাতে ছয় লেন বা আট লেন করার সুযোগ থাকে এবং এলিয়েভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে বা উড়াল সড়কও করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা না হয়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!