খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার

খুলনার ছাত্র আন্দোলনে হুমায়ূন কবীর বালু

কাজী মোতাহার রহমান

হুমায়ূন কবীর বালু। পাকিস্তান জামানায় খুলনার ছাত্র আন্দোলনের বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। শরীফ কমিশন রিপোর্ট বিরোধী আন্দোলন থেকে একাত্তরের প্রতিরোধ যুদ্ধ পর্যন্ত তার ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে তার এ দীর্ঘ পদচারণা। শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকা নিয়ে তিনি ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

আমৃত্যু বাঙালি জাতীয়তাবাদের দর্শনে বিশ^াসী ছিলেন। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তার রাজনীতির অনুপ্রেরণা। ১৯৬২ সালে শরীফ কমিশন রিপোর্ট বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে এখানকার রাজনীতিতে তার পদচারণা। তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে পাকিস্তানের লৌহ-মানব জেঃ আইয়ুব খান শরীফ কমিশন স্থগিত করতে বাধ্য হন। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে ছাত্র সমাজের বিজয়ের পর ৬২ সালে আরও একটি বিজয় ছাত্র সমাজকে সামনে এগোতে সহায়তা করে। ১৯৬৬ সালে বিকে ইউনিয়নের ইনস্টিটিউট থেকে মাধ্যমিক পাশ করার পর আযম খান কমার্স কলেজে ভর্তি হন।

জেঃ আইয়ুব খান তখন দেশের প্রেসিডেন্ট, মোনায়েম খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর। খান এ সবুর কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী। তিনি খুলনার ডাকসেটে মুসলিম লীগ নেতা। খুলনার দেয়াড়ার সন্তান এ্যাড এস এম আমজাদ হোসেন, প্রাদেশিক শিক্ষা মন্ত্রী। তখনকার দিনে গুটি কয়েক মানুষ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ছয় দফা খুলনার ছাত্র সমাজের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এর পেছনে সকল কৃতিত্ব ছাত্রলীগের। এ আন্দোলনকে তীব্রতর করতে সে-সময়ে জাহিদুর রহমান জাহিদ, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, নজরুল ইসলাম, সোবহান গোলদার, ইউনুস আলী ইনু, সৈয়দ মনোয়ার আলী, হুমায়ূন কবীর বালু, ফ ম সিরাজুল ইসলাম, শরীফ খসরুজ্জামান, শাহ নেওয়াজ জামান চৌধুরী আজাদ, মাহবুব আলম হীরণ, মোস্তাজাবুল হক মোস্তফা, শাহ আবুল কাশেম সাহসী ভূমিকা নেন।

৬৭ সালের পর থেকে ৬ দফা জনপ্রিয় হওয়ায় আওয়ামীলীগকে প্রতিরোধ করতে আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দায়ের করেন। দেশব্যাপি এ মামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়। ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিএল কলেজ, কমার্স কলেজ, সুন্দরবন কলেজ, সিটি কলেজ ও সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে এ আন্দোলন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফলশ্রুতিতে আইয়ুব খান আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।

১৯৬৮ সালে তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি ও ১৯৭১ সালে খুলনা জেলা স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১১ দফা আন্দোলণে নেতৃত্বে পুরোভাগে ছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে শহীদ হাদিসের নামানুসারে পার্কের নামকরণে অনন্য ভূমিকা পালন করেন।

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ দিবস পালনে শহীদ হাদিস পার্কে ছাত্রলীগের পতাকা উত্তোলন করেন। খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সাংবাদিকদের সম্পকৃত করার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রথমদিকে কমার্স কলেজে পাঠাভ্যাস শুরু করলেও অধ্যক্ষ আবুল বাসারের চক্ষুশুল হওয়ায় তিনি সে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য হন। শুরু হয় সিটি কলেজে তার শিক্ষা জীবন। খুলনার ছাত্র গণ আন্দোলনে ভ্যানগার্ডের ভূমিকা নিয়েছেন। যা আজকের ছাত্রসমাজের কাছে উদাহরণ।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!