খুলনায় বিনম্র-শ্রদ্ধা এবং যথাযোগ্য মর্যাদার মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
একুশের প্রথম প্রহরে নগরীর শহিদ হাদিস পার্কে শহিদ মিনারে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ও জেলা ইউনিট, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক, কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার, কেসিসি’র প্রশাসক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা পরিষদ, খুলনা বেতার, কেডিএ, চেম্বার অব কমার্স, আইনজীবী সমিতি, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিরা, খুলনা প্রেসক্লাব, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবী সংগঠন এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ভবন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ভোর হতেই প্রভাতফেরি সহযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহিদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে।
নগরভবনে সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে শিশুদের চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম।
মহান শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে বাদজোহর কালেক্টরেট জামে মসজিদসহ নগরীর সকল মসজিদে ভাষা শহিদদের রূহের মাগফেরাত ও দেশের কল্যাণ-শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। খুলনা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে ভ্রাম্যমান চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও একুশের পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বিকেলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বয়রাস্থ বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার বলেন, বাংলা ভাষাকে সবক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে। শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি নয়, সারাবছরই বাংলা ভাষাকে যেন আমরা হৃদয়ে ধারণ করি। অনেকেই এই ভাষাকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করে। ভাষার সঠিক ব্যবহার ও প্রমীত বাংলার চর্চা করতে হবে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডল। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান-কাম-উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান।
সন্ধ্যায় শহিদ হাদিস পার্কে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ছড়া পাঠ, চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
খুলনা গেজেট/ টিএ