খুলনায় গণসংহতি আন্দোলন জেলা কমিটির উদ্যোগে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। খুলনার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তা নিরসণের দাবিতে নগরীর শিববাড়ী মোড়ে বুধবার ( ২১ মে) বিকেল ৫টায় এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নাগরিক দাবি ও সমস্যা গুলোর মধ্যে ভোলা-বরিশাল-খুলনা রুটে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে অটো-রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক উচ্ছেদ বন্ধ ও লিজ প্রক্রিয়া বাতিল করে বন্ধকৃত রাষ্ট্রীয় পাটকল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চালু, খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিলসহ ৫টি জুটমিলের শ্রমিকদের বকেয়া প্রদান, নিউজপ্রিন্ট মিল থেকে কোটি-কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন ও বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ পাচার এবং জেজেআই থেকে মূল্যবান মেশিন, যন্ত্রাংশ পাচারের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি।
সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন জেলা আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল। সঞ্চালনা করেন জেলা সদস্য আল আমিন শেখ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাডঃ মোঃ বাবুল হাওলাদার, নাগরিক ঐক্য মহানগর সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, গণসংহতি আন্দোলন খালিশপুর থানা আহবায়ক মোশারেফ হোসেন, কবি নাজমুল তারেক তুষার প্রমুখ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভোলা -বরিশাল হয়ে খুলনায় পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের রুট পরিবর্তন করায় খুলনা মহানগরবাসী বিক্ষুব্ধ। খুলনায় সকল শিল্প কলকারখানা বন্ধ রয়েছে। খুলনায় যদি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে তাহলে উন্নয়ন ও শিল্পায়ন চরম বাঁধাগ্রস্ত হবে। খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের জন্য ২০১২ সালে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানী কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে পাইপলাইন স্থাপনের শুরু করে। ঐ প্রকল্পের আওতায় আড়ংঘাটা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার পাইপ স্থাপনের পর প্রকল্পটি স্থগিত হয়ে যায়। এই প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ আর্থিক অপচয় হলেও দুর্নীতি-অনিয়ম বা কোনো রকম দুরভিসন্ধি ছিলো কিনা তার কোনো তদন্ত হয়নি, এমনকি জবাবদিহিতার আওতায় কাউকে আনা হয়নি। পরবর্তীতে ভোলা-বরিশাল-খুলনা রুটে গ্যাস সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিলে খুলনাবাসী বেশ উচ্ছ্বষিত হন। কারণ খুলনায় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত হলে বন্ধকৃত শিল্প কলকারখানা চালু হবে। নতুন শিল্প উদ্যোক্তারা নতুন নতুন কারখানা তৈরিরও উদ্যোগ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে বিপুল কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সভাপতির বক্তব্যে মুনীর চৌধুরী আরো বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে ঢাকায় অটোরিকশা উচ্ছেদ করা হয়েছে। খুলনা-বরিশালসহ বিভিন্ন শহরে ভ্যান- ইজিবাইক উচ্ছেদের খবর পাওয়া যায়। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা দ্বারা তাদের নানাভাবে হয়রানী করা হয়ে থাকে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা অটোরিকশা, ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। বর্তমানে এই শ্রমজীবীদের সংখ্যা সারাদেশে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ। সেই হিসেবে এদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২ কোটি থেকে আড়াই কোটি। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। অসংখ্য অটোচালক এনজিওভিত্তিক সমিতির নিকট থেকে ঋণ নিয়ে অটো, ইজিবাইক ক্রয় করে। তারা জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি গচ্ছিত অর্থ দিয়ে এসব ঋণ পরিশোধ করে থাকে। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে এভাবে আয়ের পথ বন্ধ করে দেয়ার অর্থই হলো তাদের পেটে লাথি মারা।
খুলনা গেজেট/এমএনএস