খুলনায় হাই-টেক পার্কের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে প্রায় দুই মাস। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলে গেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রায় ৩৬ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কবে থেকে আবার কাজ শুরু হবে, সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাই-টেক পার্ক নির্মাণের স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ২-৩ জন সিকিউরিটি গার্ড ও দেশি দুয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া সেখানে আর কেউ নেই। নির্মাণকাজের শ্রমিকরা অন্যত্র চলে গেছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানেরও কেউ সেখানে নেই। ৭ তলা ভবনের ৩ তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর কাজ থেমে গেছে। চারদিকে নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ খুলনা নগরীর লবণচরা এলাকায় দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির ৩ দশমিক ৫৯ একর জমিতে স্থাপনাটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পের কাজ শুরু হয় অনেক দেরিতে। ২০২২ সালের জুনে এর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
প্রকল্পের আওতায় রয়েছে স্টিল স্ট্রাকচারের ৭ তলা মাল্টিটেনেন্ট ভবন ও একটি সিনেপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, বাউন্ডারি ওয়াল, গেট হাউস ও অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ওয়াকওয়ে, নলকূপ স্থাপন ও অভ্যন্তরীণ পানি সরবরাহ এবং ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজ। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৭০ কোটি টাকা।
ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো এর কাজ পায়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রায় ৬ মাস পর ২০২২ সালের নভেম্বরে কাজ শুরু হয়। তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ ব্যতীত এখনও অন্য কোনো কাজ শুরু হয়নি। গত জুনে প্রকল্প সম্পন্ন করার সময়সীমা শেষ হয়।
এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনার তরুণ-তরুণীরা আইটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি বিনোদনের সুযোগ তৈরি হতো।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণ এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্মাণকাজ শুরু করতে দেরি হয়েছিল। আর সরকার পরিবর্তনের পর নিরাপত্তা ইস্যুতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ভারতে ফিরে গেছে। তারা ফিরে না আসা পর্যন্ত আপাতত কাজ শুরু করা হচ্ছে না। তিনি জানান, প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৩৬ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো রয়েছে। প্রকল্প ব্যয় সামান্য বাড়তে পারে।
খুলনা গেজেট/হিমালয়