খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপ দেয়ার আহবান বিএনপির: মির্জা ফখরুল
  চলমান ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান প্রধান উপদেষ্টার: প্রেস সচিব
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৮

খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনে সভাপতি সেলিম, সম্পাদক দুদু

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং ৬২২)-এর নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে মো. সেলিম হোসেন সভাপতি এবং আব্দুর রহিম বক্স দুদু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর মাঠ প্রাঙ্গণে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং ৬২২) এর মোট ৬৮৭২ জন ভোটারের মধ্যে ৫৮৮০ জন ভোটার তাদের ভোট প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটার এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় সকাল ৮টার মধ্যে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিরতিহীনভাবে সকল ভোটার এবং প্রার্থীদের সহযোগিতায় বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছন্নভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়। শেষ রাতের দিকে ভোট গগণা শেষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচনের সম্পূর্ণ সময়ই ছিলো নিরাপত্তা বেষ্টণী দিয়ে ঢাকা। কেএমপি’র ৩ শত পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা শাখার সদস্যরাসহ বিভিন্ন এজেন্সির সদস্যরা নির্বাচনকালীন পর্যবেক্ষন করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রটি আরও জানায়, মোট ২৫টি পদে ৯৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে সভাপতি পদে কবুতর প্রতীক নিয়ে মো. সেলিম হোসেন ২ হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন কাজী মো. সরোয়ার হোসেন। তিনি দাড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ২৯৮ ভোট পেয়েছেন। কার্যকরী সভাপতি পদে গোলাপ ফুল নিয়ে বাবলু খলিফা ১ হাজার ৪০৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী ছিলেন আব্দুল বারেক ফারাজী। তিনি সাইকেল প্রতীক নিয়ে ১০৪৯ ভোট পেয়েছেন। সহ-সভাপতিতে চারটি পদে যথাক্রমে উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৬১০ ভোটে আবুল হোসেন কার্ফূ, গামছা প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৩৫৩ ভোটে আব্দুল মান্নান শেখ, মালা (ফুলের মালা) প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৩০৭ ভোটে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার এবং হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ২৯৫ ভোটে মো. ইউসুফ বিজয়ী হয়েছেন। ছাতা প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৯৫৮ ভোটে মো. আব্দুর রহিম বক্স দুদু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। আম প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ১৬ ভোটে মো. বজলু হাওলাদার যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

সহ-সাধারণ সম্পাদকের চারটি পদে যথাক্রমে হাঁস প্রতীক নিয়ে মো. দুলাল শেখ, সেলাই রেঞ্জ প্রতীকে ১ হাজার ৯৪১ ভোটে মো. রুহুল আমিন, টেলিফোন প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৬০০ ভোটে মো. দেলোয়ার সরদার এবং প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৫৮১ ভোটে মো. সাগর মিয়া নির্বাচিত হয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদকের দু’টি পদে যথাক্রমে ঠেলাগাড়ী প্রতীকে ২ হাজার ১২৫ ভোটে মো. টিটো খান এবং কলম প্রতীকে ১ হাজার ৮৭৪ ভোটে মো. শাহবুল আলম রানা বিজয়ী হয়েছেন। বই প্রতীক নিয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ৩ হাজার ৮৬ ভোট পেয়ে মো. কাজী হুমায়ূন কবির নির্বাচিত হয়েছেন। ক্রাচ প্রতীকে ৩ হাজার ২৭ ভোট পেয়ে দপ্তর সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন মো. শাহীন হোসেন মজুমদার।

লাইন সম্পাদকের ৬টি পদে যথাক্রমে আপেল প্রতীকে ১ হাজার ৫২৯ ভোটে মো. ইমরান হাওলাদার (মিন্টু), শাপলা ফুল প্রতীকে ১ হাজার ৪৬৭ ভোটে মো. মোফিজুর রহমান (পলাশ), ব্যাট প্রতীকে ১ হাজার ৪৪৮ ভোটে মো. আনোয়ার হোসেন, তাঁরা প্রতীকে ১ হাজার ৩১১ ভোটে মো. নয়ন হাওলাদার, তালা চাবি প্রতীকে ১ হাজার ১৪২ ভোটে রোকা মিয়া এবং মোবাইল প্রতীকে ১ হাজার ৯৯ ভোটে মো. নজরুল ইসলাম কাজী নির্বাচিত হয়েছেন। প্রচার সম্পাদকের দু’টি পদে যথাক্রমে মিনার প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ৯৬০ ভোটে মো. মোতালেব মাতুব্বর, মাইক প্রতীকে ১ হাজার ৮৪৪ ভোটে মো. সায়েদ তালুকদার বিজয়ী হয়েছেন। ক্রীড়া ও সংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ব্যাটারী প্রতীকে ১ হাজার ৫৭২ ভোট পেয়ে আলমগীর হোসেন বিজয়ী হয়েছেন।

উল্লেখ্য, খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিতর্কহীন নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষে কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। ওই নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানাকে ভাইস চেয়ারম্যান এবং আনিসুর রহমান মোড়লকে সদস্য সচিব, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস ও মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রণজিত কুমার ঘোষকে সদস্য করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচনের সার্বিক তদারকির জন্য বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেন সিটি মেয়র।

নির্বাচন সম্পর্কে মো. মিজানুর রহমান জানান, একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি ছিলো শ্রমিকদের। আমি শুধু সমন্বয় করেছি। বাকি কাজ করেছেন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য ভোট গ্রহণের শুরু থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত ৩ শ’ পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সহ বিভিন্ন এজেন্সির সদস্যরা পর্যবেক্ষন করেছেন। নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্নের জন্য ৮টি ক্যাম্প করা হয়। প্রতিটি ক্যাম্পে ১৮টি করে বুথ করা হয়েছিলো। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ৩০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে ভোটার এবং প্রার্থীদের সামনে স্বচ্ছতা উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া একদল দক্ষ পোলিং অফিসার দ্বারা ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন চলাকালে পরিচালনা কমিটির সদস্যগণ প্রতিটি ক্যাম্পে গিয়ে জাল ভোট যাতে কেউ না দিতে পারে সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রেখেছেন। এ ভাবেই নির্বাচনকে সকল ভোটারের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে সমর্থ হয়েছি। এছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আমার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি সকল স্তরের প্রশাসনকে নির্বাচন পর্যবেক্ষনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। সকলের কাছে কৃতজ্ঞা জ্ঞাপন করেছেন বিভাগীয় শ্রম পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। সূত্র : সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

 

খুলনা গেজেট / এআর




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!