অসাংগঠনিক উপায়ে ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির বিতর্কিত কমিটি গঠনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে দলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে খুলনা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিবকে ডুমুরিয়া উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে ঘোষিগ কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। এছাড়া ৩ দিনের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠনের কথা বলা হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৪ এপ্রিল রাতে রাজনৈতিক কর্মীরা যখন নিজ নিজ এলাকায় ঈদ পুনর্মিলনী কাজে ব্যস্ত, আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডায় ব্যস্ত ঠিক তখনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত একটি কমিটি আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়। আমরা হতবাক হয়েছি এই ভেবে যে, বিগত
দিনের আহবায়ক কমিটি প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। সেই কমিটিকে বাইপাস করে আহবায়ক সদস্য সচিবের ব্যক্তিগত সম্পর্ক যুক্ত লোক দিয়ে ত্যাগী ও পরীক্ষিত রাজনৈতিক কর্মিদের বাদ দিয়ে যাকে আহবায়ক করা হয়েছে তিনি খুলনা জেলা বিএনপির ৫ নম্বর যুগ্ম-আহবায়ক।
অথচ দলের ঘোষনা এক নেতা, এক পদ। সেই সিদ্ধান্তকে অমান্য করে ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হিসেবে পুনরায় মনোনীত করা হয়েছে। আর সদস্য সচিব হিসেবে যাকে মনোনীত করা হয়েছে তাকে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি অথবা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মানায়। ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে কখনও কোনদিন তার এমন কোনো রাজনৈতিক ভূমিকা ছিল না যে তাকে ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হিসেবে তিনি দাবি করতে পারেন।
বর্তমান ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক
হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ৫ নম্বর আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিনকে। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এবার আবারও টাকার বিনিময়ে আহবায়ক এবং সদস্য সচিবকে ম্যানেজ করে যুগ্ম-আহবায়ক হিসাবে মনোনীত হয়। আহবায়ক কমিটির আর এক সদস্য মোল্লা মাহাবুবুর রহমান কোনদিন রাজপথে কোন মিছিল করে নাই কোন মামলায় তার কোন নাম নাই। তিনি বর্তমান আহবায়কের ব্যবসায়িক পার্টনার। সেই কারনে তাকে যুগ্ম-আহবায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। মোহম্মদ জহুরুল ইসলাম বর্তমানে নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাকে এই কমিটিতে রাখা হয়নি। আব্দুস সালাম নির্বাচিত ইউপি সদস্য এবং আটলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাকে এই কমিটিতে সদস্য রাখা হয়নি। সরদার দৌলত হোসেন সাধারন সম্পাদক আটলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি এবং ১০ টার অধিক মিথ্যা মামলার আসামী। তাকে এই কমিটিতে অসম্মান করা হয়েছে। মোহাম্মদ জহুরুল আকুঞ্জি জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা। তাকে সদস্য পদ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। শাহাদুজ্জামান বাবু সাধারণ সম্পাদক রগুনাথ পুর ইউনিয়ন বিএনপি এবং ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি তাকে এই কমিটির সদস্য পদে রাখা হয়নি, ৪ নম্বর খর্ণিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ওই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দিদারুল ইসলাম দিদার তাকে এই কমিটিতে অসম্মান করা হয়েছে। গাজি আব্দুল হালিম খুলনা জেলায় একমাত্র নির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাকে সামাজিকভাবে অসম্মান করা হয়েছে।
এছাড়া সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুর মোড়ল, ফরহাদ হোসেন, শহিদুজ্জামান শহিদ, মশিউর রহমান লিটন, হাবিবুর রহমান হবি, পরিতোষ কুমার বালা, নজরুল ইসলাম মোড়ল, আজমল হুদা মিঠু, শেখ শাহিনুর রহমান শাহিনসহ অসংখ্য ত্যাগী রাজনৈতিক পরীক্ষিত কর্মী যারা পারিবারিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সামাজিক
অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া তাদেরকে বাদ দিয়েছে যে কমিটি করা হয়েছে সেই কমিটি আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
সেই সাথে খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সদস্য সচিবকে ডুমুরিয়ার মত ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক মাটিতে তাদেরকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করছি। একইসঙ্গে ৩ দিনের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়।
খুলনা গেজেট/ এসজেড