অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে খুলনা জেলা পরিষদে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের একটি টিম অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র জব্দ করেছে। সোমবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজয় কুমার রায় এবং সহকারী পরিচালক মোঃ আল আমিন।
দুদকের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দরপত্র ছাড়াই জেলা পরিষদ ভবন ইজারা নিয়ে বাণিজ্যিক পাখি পালন ও খেয়াঘাট ইজারা না দিয়ে টোল আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামানকে জিজ্ঞাসা করা হয়।
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে আছাদুজ্জামান দাবি করেন, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জেলা পরিষদের তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় সপরিবারে বসবাস করেন। জরুরি ভিত্তিতে জেলা পরিষদের কিছু কাজ টেন্ডার ছাড়াই করা হয়েছে। জেলা পরিষদের আওতায় থাকা খেয়াঘাট বিধি মেনে ইজারা দেওয়া হয়। করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয়ের সত্যতা রয়েছে এবং নয়টি ডাকবাংলো মেরামতের কাজ করা হয়েছে।
জেলা পরিষদ থেকে একটি পত্রিকা প্রকাশ করার বিষয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দুদককে জানান, আগের ধারাবাহিকতায় তিনি ওই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা পরিষদ থেকে দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের কোনো আইনি ভিত্তি আছে কি না, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। দুদক কর্মকর্তারা রূপসা এলাকায় গিয়ে দেখতে পান, জেলা পরিষদের এক হাজার আসনের মিলনায়তন নির্মাণকাজ চলছে।
খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজয় কুমার রায় বলেন, করোনাকালীন সময়ে টেন্ডার ছাড়াই হ্যান্ড ওয়াশ, স্যানিটাইজার ও মাস্ক ক্রয়, টেন্ডার বিহীন উন্নয়নমূলক কাজ করাসহ নানা ‘অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দুদক তদন্ত করছে। এর অংশ হিসেবে সোমবার বেলা ১১টার দিকে দুদকের টিম জেলা পরিষদে যায়। সেখানে দুপুর ১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পর্যালোচনার জন্য কিছু কাগজপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইল জব্দ করা হয়েছে।
খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের ডিডি আব্দুর ওয়াদুদ বলেন, ‘খুলনা জেলা পরিষদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল। কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও কিছু রেকর্ডপত্র চেয়ে এসেছি। এগুলো যাচাই বাছাইয়ের পর কোনও বিষয়ে অসঙ্গতি মনে হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অভিযানকালে কাউকে আটক করা হয়নি। তবে অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।