খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার

খুলনা গেজেট ও আমার কিছু কথা

শেখ দিদারুল আলম

গণতান্ত্রিক সমাজ বহুবাচনিক, আর গণমাধ্যম বহুমত, তথা দেশ জাতি ও জনগণের কথা বলে। গণমাধ্যম জাতির একদিকে যেমন বিবেক, তেমনি বিবেকের পাহারাও দেয়। গণমাধ্যম উন্নয়ন যাত্রার অনুঘটক। গণমাধ্যমের প্রধান কারিগর সাংবাদিক। সাংবাদিকতা তথা গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।

যদি গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাহলে গণমাধ্যম বা মিডিয়াকে বাদ দেওয়া যাবে না। গণমাধ্যম বা মিডিয়াকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। সেই দিক থেকে একটি সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ও বিকাশের যাত্রায় গণমাধ্যমের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম বাংলাদেশের এই ভুখন্ডে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আজকের অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশের গণমাধ্যম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে, ভাষা আন্দোলনে, গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সামরিক ও বেসামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, একদলীয় শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমাদের পূর্বসুরী অগ্রজ সাংবাদিকরা এই সকল সংগ্রামে তাদের লেখনী দ্বারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

খুলনা সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা এদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার আগে ও পরে সকল আন্দোলনে খুলনার গণমাধ্যম যথাযথ ভূমিকা রেখেছে।

খুলনা সংবাদপত্রের ইতিহাস অনেক পুরোনো। যুগে যুগে বেশ কিছু সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে, যারা খুলনার গণমাধ্যমকে উচ্চতায় পৌঁছিয়ে দিয়েছেন।

বর্তমান‌ে গণমাধ্যমের জন্য সব কয়টি জানালা খোলা। বিংশ শতাব্দীতে গণমাধ্যমে যুক্ত হয়েছে নাগরিক সাংবাদিকতা, মোজো (মোবাইল জার্নালিজম) ও অনলাইন সাংবাদিকতা।
এখন আর কোন সংবাদ আর লুকানো যায় না। কোনো না কোন গণমাধ্যম সেটা প্রকাশ করে দেয়।
গণমাধ্যম এখন সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে আছে। তারপরও তারা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে দেশ ও জাতির কথা বলছে।

বাংলাদেশ এখন যেমন অসংখ্য অনলাইন পত্রিকা আছে তেমনি আছে ৩০ টির বেশি বেসরকারি টিভি চ্যানেল।

খুলনার একটি প্রধান অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলনা গেজেট। চার বছর আগে দেশ ও জাতির সেবায় এবং খুলনাবাসীর কথা বলার জন্য মাহমুদ আহসানের সম্পাদনায় যার যাত্রা শুরু হয়েছিল সেটা ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেছে। খুলনার গন্ডি ছাড়িয়ে এটি এখন বাংলাদেশ তথা বিদেশে পাঠকদের মন জয় করেছে। বিশেষ করে যারা খুলনার মানুষ দেশের বাইরে থাকেন তারা প্রতিদিন একবার করে হলেও খুলনা গেজেটে চোখ বুলান।
একসময়কার উদীয়মান সাংবাদিক বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক গাজী আলাউদ্দীন আহমদের দিক নির্দেশনায় ও দৃঢ় নেতৃত্বে খুলনা গেজেট ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছে। গাজী আলাউদ্দীন যেখানে থাকুক না কেন সর্বসময় সে অনলাইনে যুক্ত থেকে দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। ফলে এই সময়কার খুলনার উদীয়মান ও কর্মঠ সাংবাদিক কৌশিক, হিমালয়, মিলনদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করা সুবিধা হয়।

আমি যদি নিপা ও জ্যোতির নাম না বলি তবে অন্যায় হবে। এরা দু’জন এই মিডিয়া য‌থেষ্ট অবদান রেখে চলেছে।

খুলনা গেজেটের অন্যতম বৈশিষ্ট সত্য ঘটনাকে তুলে ধরে। কোন সংবাদ বিকৃত করেন না বা নিজের মতকে প্রধান্য দেয় না।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক মরহুম জগলুল ভাই একবার সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণে বলেছি‌লেন, ভুল সংবাদ ছাপার চেয়ে না ছাপা উত্তম।

মরহুম আতাউস সামাদের একটি কথা প্রতিনিয়ত মনে হয়-আমি সাংবাদিক বলে আমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারি না। আমি সাংবাদিক হিসেবে কারো পারিবারিক ব্যাপার নিয়ে টানাহ্যাচড়া করতে পারি না।

আমার নেতা গিয়াস কামাল চৌধুরী বলতেন, গণমাধ্যম সেটার মালিক একজন বা দু’জন হতে পারে। তবে সেটা জনগণের সম্পদ। জনগণ দেখতে চায় তাদের কথা বা দেশের কথা।

মালিকের কথা বা মালিকের ছবি নয়।

খুলনা গেজেট যখন প্রকাশ হয়েছিল এই মূলমন্ত্র ধারণ করে যাত্রা শুরু করেছিল। যেটি এখনও ধরে রেখেছে।
বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামাত, জাসদ, সি‌পি‌বি, নাগরিক ঐক্যসহ যতদল ও মত আছে
খুলনা গেজেটের কাছে সকলের মূল্য সমান।

খুলনা গেজেট বর্তমান সমাজে সাংবাদিকতার নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নিজের গুণগত মান ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য দরকার সক‌লের সহ‌যো‌গিতা, আন্তরিক ইচ্ছা ও পাঠকদের দোয়া।

লেখক : যুগ্ম সম্পাদক, খুলনা গেজেট এবং খুলনা প্রতি‌নি‌ধি, ইউএন‌বি।

খুলনা গেজেট/এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!