খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

খুলনা গেজেট : একটি অনন্য অনলাইন পত্রিকা

প্রফেসর ড. গাজী আবদুল্লাহেল বাকী

‘খুলনা গেজেট’ বন্দর নগরী খুলনা থেকে প্রকাশিত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ অনলাইন নিউজ পোর্টাল। পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক জনাব মোঃ মাহমুদ আহসান। পত্রিকাটি নিয়মিত খুলনা অঞ্চল তথা দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রকাশ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বে পূর্বে একমাত্র ‘প্রিন্ট’ প্রত্রিকা প্রকাশের প্রচলন ছিলো। বর্তমান বিশ্বে ‘প্রিন্ট’ প্রত্রিকার পাশাপাশি ’অনলাইন’ পত্রিকার প্রকাশনা শুরু হয়েছে, যা যে কোনো স্থানে, যে কোনো সময়ে, যে কোনো পাঠক উপভোগ করতে পারেন। ফলে গুরুত্বপূর্ণ বা জরুরী তথ্য অবগত হতে এখন আর সময় লাগে না।

‘খুলনা গেজেট’ ইতোমধ্যে তার এক বছর সময়কাল পার করে ১৩ জুলাই ২০২১ তারিখে দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ করেছে । তাই পত্রিকাটির প্রথম জন্মদিনে অমি একজন নিয়মিত পাঠক হিসেবে আমার অভিব্যক্তি প্রকাশ করছি।

পত্রিকাটির বর্তমান অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য মাননীয় সম্পাদক ও আমার স্নেহধন্য নির্বাহী সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট অনান্য যারা তাদের শ্রম, মেধা এবং পত্রিকাটির উন্নয়নে সকল কৌশল ও পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের সকলকে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাদের এবং পত্রিকাটির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

‘খুলনা গেজেট’ যে সব বৈশিষ্ট্য নিয়ে অগ্রসর পাঠকের নিকট চব্বিশ ঘন্টা হাজির থাকে, সেগুলোর উপর কিছু আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত: ‘খুলনা গেজেট’ খুলনা অঞ্চলের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ অনলাইন পত্রিকা হওয়ায়, এতদাঞ্চলের চব্বিশ ঘন্টার গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো এ পত্রিকার মাধ্যমে সহজেই পাঠক পেয়ে থাকে। সেই সাথে বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের তথা আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলোও এখানে সন্নিবেশিত হয়। এতদব্যতীত, যেহেতু পত্রিকাটির নামে ‘খুলনা’ শব্দ থাকায় একটা আঞ্চলিক গন্ধ স্বাভাবিকভাবেই অন্য স্থানের পাঠকের নিকট আসতে পারে এবং এর ফলে অনেকেই মনে করতে পারেন যে এ পত্রিকায় শুধমাত্র খুলনার সংবাদই প্রকাশিত হয়। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। যেমন সিলেট থেকে অনলাইন পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। তার নাম dailyCNBangla। এখানে সিলেট সংক্রান্ত কোনো শব্দ জড়িত নয়। আবার সিলেটের স্বনামধন্য ড. সৈয়দ রাগীব আলী সাহেবের প্রিন্ট ও অনলাইন বাংলা পত্রিকার নাম ‘সিলেটের ডাক’। পত্রিকাটি খুবই উন্নতমানের, সমৃদ্ধ এবং বহুল প্রচারিত। সিলেটে অনেক প্রিন্ট পত্রিকা আছে, কিন্তু সিলেটের ডাক সবাই পড়ে। এই পত্রিকা লন্ডনেও যায়। অপরদিকে ‘ঢাকা টাইমস’-এ দেশে-বিদেশের সকল তথ্য পাওয়া যায়। সেদিক থেকে ’খুলনা গেজেট’ হিসেবে নাম সঠিক আছে। শুধু তাই নয়, বন্দর নগরী উন্নয়নশীল ‘খুলনা’ নামটি এই পত্রিকার মাধ্যমে দেশ বিদেশে বহুদূর পর্যন্ত পরিচিত করানোর একটি মাধ্যম হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

দ্বিতীয়ত: সংবাদ এর সাথে এর ছবিগুলো অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ। লেখা যেমন কথা বলে, ছবিও তেমনি কথা বলে; সংবাদের মূল বিষয়টিকে প্রথমেই তুলে ধরে। পত্রিকাটিতে সংবাদগুলো সাজানো এবং একটি সংবাদকে সুন্দর পাঠযোগ্য করে তুলে ধরার জন্য যে ভাষা ব্যবহার করা হয়, তা ঐ বিশেষ সংবাদটি বুঝার জন্য যথেষ্ট। তবে মূল লেখার কৌশলটি হলো যে কোন লেখা যথাযথ ও সংক্ষিপ্ত হলে সেটিই উত্তম। শব্দ ও শব্দগুচ্ছের চয়ন ও ব্যবহার সুন্দর হলেই, লেখা সুন্দর। বিদেশী ইংরেজী অনেক পত্রিকায় দেখা যায় অতি অল্প কথায় অর্থাৎ যথাযথ সংবাদ সংক্রান্ত অল্প শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করে বেশ কিছু অনলাইন পত্রিকা ছাপা হয় এবং তা পড়তেও ভাল লাগে। তাছাড়া সময়ও কম লাগে। আরেকটি বিষয় পত্রিকায় সংবাদের শিরোনাম যত সংক্ষিপ্ত হবে, ততো ভালো। এই বিষয়টির প্রতি ‘খুলনা গেজেট’ একটু মনোযোগ দিলে সংবাদগুলো তুলে ধরার ক্ষেত্রে বর্তমানের চেয়ে অনেক উত্তম একটি বৈচিত্র প্রকাশ পাবে।

আমার দৃষ্টিতে ‘খুলনা গেজেট’ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে। কোনো নীতির সাথে আপোষ করেনি বরং নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশে সাবধানতা অবলম্বন করে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ দিনগুলোতেও কার্যকর থাকবে বলে আশা করি। ‘গেজেট’-এর বর্তমান ভূমিকা হলো সংবাদের নিরপেক্ষতা, নিযন্ত্রণ ও ’চেক’ এবং ‘ক্রস চেক’ ইত্যাদি সম্পন্ন করে সংবাদ প্রকাশের ব্যবস্থা নেয় বলে আমার মনে হয়।

আমি ব্যক্তিগত জীবনে ইংরেজী ও বাংলায় দুটি ভাষায় কবিতা, প্রবন্ধ, ইত্যাদি লিখে থাকি। সেই সাথে বাংলা হতে ইংরাজি ও ইংরাজি হতে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করার প্রচেষ্টাও নিয়ে থাকি। আমার প্রকাশিত কয়েকটি পুস্তক দ্বিভাষিক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, ফলে পাঠক উভয় ভাষায় উপকৃত হয়ে থাকে। আমি মনে করি বর্তমান যুগের জন্য এটি অপরিহার্য। তাছাড়া আমরা মাত্র দু’একজন বিখ্যাত সাহিত্যিকের অবদান বাংলা হতে ইংরেজীতে অনুবাদ করে আনন্দ পাই। কিন্তু বাংলা সাহিত্যে আরো অনেক কবি সাহিত্যিক আছেন, যাঁদের কালজয়ী লেখা ইংরেজিতে অনুদিত হয়নি। যাহোক, আমি পত্রিকার সাথে যোগাযোগ করে একদিন বলি যে আপনাদের অনলাইন পত্রিকায় ‘সাহিত্য’ নামে একটি পোর্টাল আছে এবং সেখানে শুধুমাত্র বাংলা প্রবন্ধ-গল্প-কবিতা ছাপা হয়। আমি বললাম অনেক অনলাইন পত্রিকার মতো (English) নামে একটি পোর্টাল থাকলে অনেকেই লেখা পাঠাতে পারতেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আমাকে বলেন, স্যার, আপনি লেখা পাঠিয়ে দেন, প্রকাশ হবে। আমি প্রমথ চৌধুরীর ৫টি সনেট এর ইংরেজীতে অনুবাদ করি। সত্যই দেখলাম সেগুলো ঐ সাহিত্য পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে এবং সম্ভবত: এটাই প্রথম এই পত্রিকায় ইংরেজী প্রকাশনা। যাহোক আমার অভিমত যদি (English) অথবা ‘ইংরেজি’ নামে পোর্টাল থাকলে আরও অনেকে হয়তো লেখা পাঠাতেন, অথবা (ইংরেজি) শব্দ দেখলে অনেকেই লেখা পাঠাতে আগ্রাহান্বিত হতো।

পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণকারী ডিজাইন ও লেখা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রকাশ করলে ভালো হয়। ‘খুলনা গেজেট’-এ স্লাইড-শোতে যে ছবিগুলো দেয়া হয়, তা আরও প্রতিনিধিমূলক হতে হবে। অনেক সময় খবরের মধ্যে ভিডিও থাকে, যা ‘খুলনা গেজেট’  প্রকাশ করে থাকে। তবে সেগুলো দেখেছি সব সংবাদের শেষ অংশে থাকে। ঐ ভিডিওগুলো সংশ্লিষ্ট সংবাদের মাঝে স্থাপন করলে ভালো হয়। পাঠক-দর্শকের একঘেয়েমি দূর করার জন্য যোগ-বিয়োগ আনা উত্তম, বিশেষ করে প্রথম ছবিটির পরিবর্তন দ্রুত হওয়া দরকার। সর্বোপরি আধুনিক পাঠকের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রাখলে পত্রিকাটির প্রচার ও প্রসার নিঃসন্দেহে বৃদ্ধি পাবে এ আমার আন্তরিক বিশ্বাস। ‘খুলনা গেজেট’ ইতিহাস সৃষ্টি করুক, এই কামনা করি।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!