বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনরত খুবি’র (খুলনা বিশ্ববিদ্যলয়) দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। রাত ৮ টার দিকে শরবত পান করিয়ে তিনি তাদের অনশন ভাঙান।
এ সময় উপাচার্য বলেন, আমরা শুধু শিক্ষকই নই, মা বাবাও বটে। শিক্ষার্থীরা যদি ভালো না থাকে আমরাও ভালো থাকতে পারিনা। শিক্ষার্থীরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে আবেদন করেছে, দুঃখ প্রকাশ করেছে। আমরা খুব শীঘ্রই শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং ডেকে বিষয়টির সুরহা করবো। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যায়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানাই।
এর আগে অনশনরত শিক্ষার্থীদ্বয় দুই দফায় উপাচার্য বরাবর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে আবেদন করে। তবে সেখানে দুঃখ প্রকাশের কথা উল্লেখ না থাকায় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেয়নি বলে জানা গেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার প্রেরিত পৃথক আবেদনপত্রে দুই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেছে, “গত ১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা আন্দোলন চলার সময় আমাদের অবস্থানস্থলে দু’জন সম্মানিত শিক্ষকের গাড়ি চালিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঐ ঘটনার আলোকে যে দু’জন সম্মানিত শিক্ষকের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, বিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সে ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। উল্লেখ্য এ কথা স্বীকার্য যে, শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ অবশ্যই অনাকাঙ্খিত বিষয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠকালীন অবস্থায় আমি এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ করিনি এবং ইতঃপূর্বে এমন কোনো অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে নেই। তবুও সৌজন্যের সহিত বলছি যে, আমার অজ্ঞাতে হলেও আমাদের শিক্ষক যদি আমার দ্বারা কোনো কষ্ট পেয়ে থাকেন তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।” আবেদনপত্রে সার্বিক ঘটনা বিবেচনা করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনের মধ্যস্থতায় উপাচার্য বরাবর দুঃখ প্রকাশ করে আবেদন করে দুই শিক্ষার্থী।
মোহাম্মাদ মোবারক হোসেন নোমান বলেন, উপাচার্য স্যার আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, এজন্য আজ আমরা অনশন থেকে সরে এসেছি। আমাদের পাশে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাই এ্যাসোসিয়েশন এর ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাজমুস সাদাত বলেন, আমরা এই অনশন কর্মসূচির শুরু থেকেই শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। এর মাঝে ক্যাম্পাসে তৃতীয় পক্ষ ঢোকার চেষ্টা করেছিলো। আমরা সবসময় বদ্ধ পরিকর ছিলাম এবং আছি, আমাদের ক্যাম্পাসকে নিরাপদ ও সমুন্নত রাখতে।
উল্লেখ্য, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গত সপ্তাহের রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুম ইসলাম সোহান (১৭ ব্যাচ) ও বাংলা ডিসিপ্লিনের মোবারক হোসেন নোমান (১৮ ব্যাচ) অনশন শুরু করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে।
খুলনা গেজেট/ এ হোসেন