জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী জাতীয় শোক দিবস খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হয়েছে।
শোক দিবসের কর্মসূচির শুরুতে সকাল ৯ টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে কালোব্যাজ ধারণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৯-২০ মিনিটে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের প্রাক্কালে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোকর্যালি শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্থাপিত কালজয়ী মুজিব চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
পরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এসময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার সাধন রঞ্জন ঘোষ, ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) উপস্থিত ছিলেন।
এরপরপরই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, বিভিন্ন স্কুল (অনুষদ), বিভিন্ন ডিসিপ্লিন (বিভাগ), বিভিন্ন হল, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর উপাচার্য আইন ডিসিপ্লিন কর্তৃক মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মরণিকা ‘অগ্নিগিরির অস্তাচল’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন।
এছাড়া সকাল ১১ টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে ওয়েবিনারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান।
ওয়েবিনারে মুখ্য আলোচক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক বলেন, পনেরই আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিলো একটি পরিকল্পিত নীল নকশা, গভীর ষড়যন্ত্র। এটি ছিল দেশকে পাকিস্তানি কায়দায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র। তিনি যাতে দেশকে আত্মনির্ভরশীল করতে না পারেন এবং তাঁর স্বপ্ন যাতে বাস্তবায়ন না হয় সেই দুরভিসন্ধি ছিল এই হত্যাকাণ্ডে। এর সাথে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিও জড়িত ছিলো। সেদিন খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু এদেশের জনমানুষের হৃদয়ে, রক্তের সাথে, প্রকৃতির সাথে মিশে আছেন। তিনি বলেন, ইতিহাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অনেক ঘটনা রয়েছে। কিন্তু ১৫ আগস্টের মতো জঘন্য হত্যাকাণ্ড আর দেখা যায় না। যেখানে বঙ্গবন্ধু ও শিশু-অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ সপরিবারে হত্যা করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, একটি সদ্য স্বাধীন দেশকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শের নাম, তাঁর আদর্শ অন্তরে ধারণ করে এবং তা কাজে লাগিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা সংবিধানের এই চারটি স্তম্ভকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
এছাড়া বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়ার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।
এর আগে সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য, ট্রেজারার, মন্দির নির্মাণ কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. সমীর কুমার সাধু, কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দীপক চন্দ্র মন্ডল, বিমান সাহা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কৃষ্ণপদ দাশ। প্রার্থনা শেষে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।