তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় ‘মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন এর দক্ষতা উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইল অ্যাপ, গেম ও জব ফেস্টিভ্যাল-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ মে (শনিবার) বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত ফেস্টিভ্যালে এ প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, প্রযুক্তির কল্যাণে আজ সবকিছু আমাদের হাতের মুঠোয় এসেছে। প্রযুক্তি পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে, আমাদেরকেও বদলে দিয়েছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি জীবনকে আরও সহজ করে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মোবাইল অ্যাপস্ এবং গেমস্ আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলো জীবনকে আরও বিস্তৃত করেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে কোনো ভারী ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজন হচ্ছে না। মোবাইল গেমিং এবং অ্যাপস্ এর মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই বিলিয়ন্স অব ডলার আয় করতে পারছি। এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মার্কেট আশাব্যঞ্জক সাফল্য পায়নি। তবে খুব শীঘ্রই আমরা এটাকে আশাব্যঞ্জক স্তরে নিতে পারবো। এজন্য মোবাইল অ্যাপস্ এবং গেম্স এর সাথে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে হবে এবং তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। একই সাথে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারের সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
।। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুবসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : উপাচার্য ।।
উপাচার্য বলেন, বাঙালি সেই জাতি যারা লড়াই করে নিজেদের ভাষাকে এনেছে, স্বাধীনতাকে এনেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। সেজন্য বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে- যুব সমাজকে প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। বাঙালিদের মধ্যে সৃজনশীলতা রয়েছে, এখন যথাযথভাবে সেই প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ প্রয়োজন। আমি মনে করি- সেই সুযোগ সারা বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ধরনের আয়োজন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের যে জিনিয়াস তাদেরকে আমরা খুঁজে বের করতে পারবো। আমি আশা করি আজকের এই মোবাইল অ্যাপ, গেইম ও জব ফেস্টিভ্যাল-২০২৩ থেকে নতুন নতুন আইডিয়া বের হয়ে আসবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ইনোভেশন হাব এবং ইনকিউবেশন সেন্টারের কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করার জন্য সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। একই সাথে এই ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের জন্য তাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ ফেস্টিভ্যালে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন এর দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ‘স্মার্ট ক্যারিয়ার উইথ অ্যাপ এন্ড গেম’ শীর্ষক সেশন পরিচালনা করেন খুুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক শেখ আলমগীর হোসেন ও মোটিভেশনাল বক্তব্য রাখেন সোলায়মান সুখন। এছাড়া ‘কুইজ প্রতিযোগিতা’, ‘প্রেজেন্টেশন অন শর্ট লিস্টেড গেম এন্ড অ্যাপ আইডিয়া’, ‘অ্যানিমেশন মুভি স্ক্রিনিং’ শীর্ষক সেশন অনুষ্ঠিত এবং শিক্ষার্থীদের সিভি গ্রহণ ও জব ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। পরে উপাচার্য কুইজ প্রতিযোগিতা, আইডিয়া কনটেস্ট এবং র্যাফেল ড্রয়ের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের প্রফেসর সেহরীশ খান।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধানসহ শিক্ষক এবং অংশগ্রহণকারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/কেডি