খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
  ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক
  সচিবালয়ের আগুন সোয়া ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস

খুবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উদ্বোধন, দু’হাজার মুসল্লির জুমা আদায়

খুবি প্রতিনিধি

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উদ্বোধন করা হয়েছে শুক্রবার। উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বেলা ১২টা ৩৫ মিনিটে মসজিদের উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত মোনাজাত করা হয়। পরে জুমা’র নামাজ শুরু হওয়ার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

অনেক বিলম্ব ও জটিলতা অতিক্রম করে মসজিদে নামাজ উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি এবং প্রথম জুমা’র নামাজ আদায়ের মাধ্যমে নিয়মিত ওয়াক্তীয় নামাজ আদায় সম্ভব হওয়ায় মহান আল্লাহপাকের নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। তিনি এই মসজিদ নির্মাণের দীর্ঘ প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তাঁর একান্ত আগ্রহ, ব্যক্তিগত এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টার কথাও স্মরণ করেন। উপাচার্য বিশেষ করে একনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় এ মসজিদের জন্য প্রণীত উপ-প্রকল্পটিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দেওয়ায় তাঁকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া এ প্রকল্পটি অনুমোদনের সাথে বিভিন্ন স্তরে সম্পৃক্ত অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সচিববৃন্দ, ইউজিসিসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, সত্যিই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আজ একটি আনন্দের দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারি ও আশপাশের ছাত্রদের বাইরেও শত শত মুসল্লি এ মসজিদে জুমা’র নামাজ আদায়ে আসার জন্য তাদেরকেও তিনি ধন্যবাদ জানান। উপাচার্য বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর, ইবাদতের জায়গা। এখানে সবাই নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদে এসে মুসল্লিরা যাতে সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায় করতে পারেন এবং তাদের অন্তরে প্রশান্তি পায়, মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সুযোগ হয়, নিজেদের ভুল ত্রুটির মাগফেরাত কামনার সাথে সাথে ন্যায়, সত্য ও কল্যাণের পথে চলা যায় সেদিকে আলোকপাত করেন। তিনি মসজিদের একপাশে পর্দার সাথে যাতে মহিলারা নামাজ আদায় করতে পারেন সে ব্যবস্থা রাখার প্রতি মসজিদ কমিটিকে নির্দেশনা দেন এবং মসজিদসহ আশপাশে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ওপরও বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

উপাচার্যের শুভেচ্ছা বক্তব্যের আগে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম, মসজিদের দ্বিতীয়পর্বের চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নকারী টিমের প্রধান স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মোঃ মারুফ হোসেন সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

পরে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মওলানা মুফতি আব্দুল কুদ্দুস বয়ানের পর এ মসজিদের প্রথম জুম্মার নামাজে ইমামতি করেন। নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, দেশ, জাতি, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়ার আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশ ইমাম হাফেজ মাও. মোঃ মোস্তাকিম বিল্লাহ।

এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় এ মসজিদের প্রথম আজান দেন মসজিদের খাদেম হাফেজ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারি এবং আশপাশ এলাকায় অবস্থানরত ছাত্র, এলাকাবাসী এবং আশপাশের উপজেলাসহ দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা জুম্মার নামাজে শরিক হন।

বেলা ১২টার আগেই পায়ে হেটে, সাইকেল, রিকশা, মোটর সাইকেল, ইজিবাইক, প্রাইভেটকারে মুসল্লিদের আগমন শুরু হয়। নামাজ ও বয়ায়নের আগেই মসজিদ মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়। প্রায় দু’হাজার মুসল্লি প্রথম এ জুমা’র নামাজে শরিক হন। নামাজ ও দোয়ার পর বহু সংখ্যক মুসল্লি উপাচার্যের সাথে কুশল বিনিময়কালে দৃষ্টিনন্দন ও সুপরিসর এ মসজিদ নির্মাণের একান্ত প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর জন্য দোয়া করেন। পরে উপাচার্য মসজিদের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং মুসল্লিদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেন। অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ যাতে দ্রুত শেষ করা যায় সে ব্যাপারে তিনি নির্দেশনা দেন।

১৪৫০০ বর্গফুট আয়তনের একতলা বিশিষ্ট এই মসজিদটি এক গুম্বজ বিশিষ্ট। এই গুম্বজটি খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুল কাদির ভূঁইয়া ২০০৩ সালে এ মসজিদটির নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের তৎকালীন শিক্ষক মুহাম্মদ আলী নকী মসজিদটির প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন করেন। তবে মসজিদের প্রাথমিক ভিত্তির কাজ শুরুর পর দীর্ঘদিন আর এর নির্মাণ কাজ এগোয়নি। ২০১৪ সালে বর্তমান উপাচার্য মসজিদের নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করা এবং তা শেষ করতে নিরন্ত উদ্যোগ নেন। এ সময় মসজিদটির নকশার কিছুটা পরিবর্তন সাধন করে পূর্ণাঙ্গ করা হয়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!