করোনাভাইরাসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, গতকাল তার (খালেদা জিয়া) জ্বর থাকলেও আজ নেই। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এই অবস্থা আগামী ৪৮ ঘণ্টা থাকলে তিনি করোনার ঝুঁকি থেকে মুক্ত হবেন।
রোববার (১৮ এপ্রিল) রাতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে দেখে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা পুরোপুরি সুস্থ আছেন উল্লেখ করে ডা. সিদ্দিকী বলেন, তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। আপনাদের (সাংবাদিক) কাছেও দোয়া চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছি। তিনি সুস্থ আছেন। এই অবস্থা ঠিক থাকলে তাকে করোনা ঝুঁকি মুক্ত বলা যাবে।
ডা. সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আজ দশম দিন। এই সময়টা রোগীর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখন তিনি করোনার বিপজ্জনক সময় পার করছেন। তারপরও তার শরীরের অবস্থা মোটামুটি খুব ভালো।
খালেদা জিয়া মানসিকভাবে শক্ত আছেন উল্লেখ করে ডা. সিদ্দিক বলেন, আমরা তাকে শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছি। তার ব্লাড সুগারসহ অন্যান্য যেসব প্যারামিটার রয়েছে সেগুলো ঠিক আছে। খালেদা জিয়ার কাশি নেই, গলা ব্যাথা নেই।
হাসপাতালে নেওয়া বা কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরিকল্পনা আছে কি-না জানতে চাইলে ডা. সিদ্দিকী বলেন, আমরা সব পরীক্ষা করেছি। রিপোর্ট ভালো এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা- খালেদা জিয়া নির্দ্বিধায় আমাদের সঙ্গে কো-অপারেশন করছেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলে তারেক রহমান বা অন্যান্যরা খোঁজ রাখছে কি-না জানতে চাইলে ডা. সিদ্দিকী বলেন, প্রতিনিয়ত সবাই খোঁজ খবর নিচ্ছেন। সার্বক্ষণিক তারা (তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান) যোগাযোগ রাখছেন। তিনি আমাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে এবং দলের নেতাকর্মীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন ও ডা. আল মামুন।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজার আরও আটজন ব্যক্তিগত স্টাফের করোনা শনাক্ত আক্রান্ত হয়। তাদের চিকিৎসাও গুলশানের বাসভবনে চলছে।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছরের মতো কারাগারে থাকার পরে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।