খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন পরিবারের

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশে বিরোধীদল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে তাঁর পরিবার আবারও সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে।

ঢাকায় তাঁর পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, চিকিৎসকরা বেগম জিয়াকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন, সেজন্য তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নতুন করে আবেদন করেছেন।

ছয়দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়াকে আবার ঢাকায় বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তির পর রোববার রাত থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে সিসিইউতে রাখা হয়েছে।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ঢাকায় একটি বেসরকারি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছিলেন গত ৭ই নভেম্বর।

কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই গত শনিবার ১৩ই নভেম্বর তাঁকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখন সিসিইউতে রাখা হয়েছে।

যে কারণে আবারও আবেদন
কয়েকদিন আগে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

তাঁর বোন সেলিমা ইসলাম বলেছেন, বেগম জিয়ার এখন বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন-চিকিৎসকরা এখন এই একটাই পরামর্শ দিচ্ছেন।

সেজন্য তাদের ভাইবোনদের পক্ষ থেকে আবারও সরকারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

“এটাই আমাদের আবেদন সরকারের কাছে যে তাঁকে (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য যাওয়ার অনুমতি ওনারা (সরকার) যেন দেয়” বলেন বেগম জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, তারা যত দ্রুত সম্ভব খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চান।

কোন দেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চায় পরিবার-এই প্রশ্নে সেলিমা ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুর কাছে হবে এবং সেজন্য সিঙ্গাপুরকে তারা অগ্রাধিকার দেন।

তবে যে দেশেই অনুমতি মিলবে, সেখানেই তারা নেবেন বলে মিজ ইসলাম জানান।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি এবং ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা জটিলতা ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে।

এখন উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকায় এবং জ্বরের কারণে তাকে হাসপাতালে সিসিইিউতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

তাঁর একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ড: জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সিসিইউতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে।

তিনি বলেছেন, এখন বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার বিকল্প তারা দেখছেন না।

যদিও ঢাকার চিকিৎসকদল লন্ডন এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করেই বেগম জিয়াকে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

তবে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেছেন, এখানে আধুনিক চিকিৎসার সাপোর্ট বা সুবিধার ঘাটতি আছে বলে চিকিৎসকরা তাদের বলছেন।

“তাঁর (খালেদা জিয়ার) শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। বুঝতেই পারছেন যে ২৬দিন হাসপাতালে থেকে আসলো। আবার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই হাসপাতালে যেতে হলো” বলেন মিজ ইসলাম।

খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সেলিমা ইসলাম আরও বলেন, “তাঁর হিমোগ্লোবিন অনেক কমে গেছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ, হাঁতে চলতে পারছে না।সেজন্যই আমরা বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করতে চাই।”

“কারণ এখানে তো ডাক্তাররা সেভাবে চিকিৎসা দিতে পারছেন না। কারণ তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি বা সুবিধা নাই” বলেন মিজ ইসলাম।

এদিকে বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা জানিয়েছেন, মানবিক কারণে জামিন বা সরকারের নির্বাহী আদেশে-যে কোন উপায়ে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেয়া হোক, সেটা পরিবার চাইছে।

সেজন্য এর আগে আবেদ নাকচ হওয়ার পরও আবার আবেদন করা হয়েছে।

সরকার কী বলছে
কয়েকমাস আগেও খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন নাকচ করার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে আইনি সমস্যার কথা বলা হয়েছিল।

তখন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, দুনীতির মামলায় সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় সরকার তাকে বিদেশে যাওয়া অনুমতি দিতে পারে না।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বক্তব্য ছিল, মুক্তির এই আদেশ বাতিল করে তিনি আবার জেলে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করলে তখন তা বিবেচনার প্রশ্ন আসতে পারে।

খালেদা জিয়ার পরিবার বা বিএনপি নেতারা তা গ্রহণ করেননি।

এখন আবার পরিবার যে আবেদন করেছে, তা এখনও আইনমন্ত্রী দেখেননি বলে জানিয়েছেন।

তবে তিনি বলেন, একই ধরনের আবেদন হলে তাতে তাদের আইনগত দিক থেকে অবস্থান পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বলেছেন, সরকার চাইলে নিজেরাই মুক্তির আদেশ সংশোধন করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিতে পারে।

খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজা নিয়ে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বন্দি ছিলেন।

গত বছরের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাঁর সাজা স্থগিত করে তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!