কয়লা সঙ্কটের মুখে ভারত। যার জেরে দেশ জুড়ে বিদ্যুৎসঙ্কটের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দেশের কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে সেপ্টেম্বরের শেষে চার দিনের মতো কয়লা মজুত ছিল। যা বেশ কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এই ঘাটতির কারণে দেশের অর্ধেকের বেশি তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চিন জুড়ে বিদ্যুৎসঙ্কট চলছে। এ বার ভারতও কি সেই সঙ্কটের মুখোমুখি হবে, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। চিনের মতো ভারতের সামনেও দু’টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমত, অতিমারির পর বিভিন্ন শিল্পসংস্থা খুলে গিয়েছে। ফলে বিদ্যুতের বিপুল চাহিদা বেড়েছে। অন্য দিকে, বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও কয়লার উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে অতি বর্ষণের কারণে কয়লাখনিগুলি প্রভাবিত হয়েছে।
আবার আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বাড়ায় দেশীয় উৎপাদনের উপর ভরসা বাড়ছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলির। সেই চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
দেশের ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কয়লা পরিচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে। মনে করা হচ্ছে, এই সামগ্রিক কারণে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে। ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ক্রিসিল লিমিটেড-এর শীর্ষ আধিকারিক প্রণব মাস্টার জানিয়েছেন, যত ক্ষণ না সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, দেশের কিছু অংশে বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে। তার জন্য গ্রাহকদের পকেট থেকে অতিরিক্ত খরচও হতে পারে।
তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বেড়েছে। কয়লা আমদানির ক্ষেত্রেও খরচ বেড়েছে। যার জেরে দেশের কয়লা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির উপর বিপুল চাপ বাড়ছে। তবে বৃষ্টি কমলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলেও জানিয়েছেন প্রণব।
ভারতের কয়লা মন্ত্রকের সচিব অনিল কুমার জৈন জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে কয়লা উৎপাদন ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত হয়েছে। যার জেরে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে বর্তমানে ৬০-৮০ হাজার টন কয়লার ঘাটতি চলছে। পূর্ব ভারতের অন্যতম বৃহৎ কয়লা উৎপাদন কেন্দ্র ধানবাদে গত মাসে বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কয়লা সরবরাহ বাড়বে এবং যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে তা মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জৈন। আনন্দবাজার পত্রিকা।
খুলনা গেজেট/ এস আই