খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

ক্লিন ফিড না চলায় দেশের মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতিগ্রস্ত : তথ্যমন্ত্রী

গেজেট ডেস্ক

বিদেশি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) সম্প্রচার না মানায় দেশের সংস্কৃতি ও মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি ও শিল্পীসমাজ। এ কারণে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি— বলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইমপ্রেস গ্রুপের কার্যালয়ে চ্যানেল আই টেলিভিশন সম্প্রচারের ২৩তম বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিদেশি চ্যানেলগুলো তাদের মূল কনটেন্টের সঙ্গে কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে না— সরকারের তরফ থেকে এমন নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে বিদেশি সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ রয়েছে। বিজ্ঞাপন প্রচার ছাড়া বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার সম্ভব নয়— এমন যুক্তি দেখিয়ে সম্প্রচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত এসেছে কেবল অপারেটরদের দিক থেকে।

কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ গনমাধ্যমকে বলেন, এ মুহূর্তে ব্রডকাস্ট অপারেটররা বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার করতে চাচ্ছে না। আসলে এখনও দেশে সময় আসেনি বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করার। ফলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।

বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার কার্যকরের বিষয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার (ক্লিন ফিড) না মানার কারণে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কয়েক হাজার কোটি টাকা, যা দেশে লগ্নি হতো তা বিদেশের চ্যানেলে লগ্নি হচ্ছে। আইন ভঙ্গ করে বিদেশি চ্যানেলে যদি বিজ্ঞাপন না দেখানো হতো, তা হলে দেশের মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিগুলো লাভবান হতো। দেশের অর্থনীতি লাভবান হতো।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আইন অনুযায়ী দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিনফিড) সম্প্রচার বাস্তবায়নে আগামীকাল শুক্রবার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

তার ভাষায়, ‘১ অক্টোবর থেকে আমরা সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। কোনো বিদেশি চ্যানেলে ক্লিন ফিড দেখানো না হলে এবং মন্ত্রণালয়, টেলিভিশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কেবল অপারেটর ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে কেবল লাইনে সম্প্রচারের জন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর নির্ধারিত ক্রমের ব্যত্যয় হলে বা কোনো কেবল অপারেটর আইন ভঙ্গ করে নিজেরা বিজ্ঞাপন বা অনুষ্ঠান প্রদর্শন করলে বা আইনের অন্য কোনো ব্যত্যয় ঘটালে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল ডাউনলিংকের অনুমতিপ্রাপ্ত ডিস্ট্রিবিউটরদের এবং কেবল অপারেটরদের ওপরই আইন ভঙ্গের দায় বর্তাবে। আগামীকাল থেকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‘দিনের পর দিন তারা সময় নেবে, কালক্ষেপণ করবে, এটি হয় না। ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপালসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল কেউ দেখাতে পারেন না। আর আমাদের দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিড পাঠাচ্ছে না, এ অজুহাতে এখানে ক্লিন ফিড চালাবে না, এটা হয় না।’

মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর বিদেশি সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ করে দেন কেবল অপারেটররা।

চ্যানেল আই টেলিভিশন সম্প্রচারের ২৩তম বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন, সাদী মোহাম্মদ, চ্যানেল আই পরিচালক শাইখ সিরাজসহ চ্যানেলটির কর্মকর্তারা। চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর অনলাইনে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্লাটফর্ম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি নিয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। খসড়া সম্পন্ন হয়েছে। নীতিমালা পাস হলে, প্লাটফর্মগুলোকে তা অনুসরণ করতে হবে। কোনো ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অনুষ্ঠানে কেক কাটার আগে চ্যানেল আইকে অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জীবন ও জাতি গঠনে কাজের একটি অন্যতম উদাহরণ চ্যানেল আই। বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশকে পৌঁছানোর লক্ষ্যে গত ২২ বছর ধরে কাজ করেছে চ্যানেল আই এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে আশা করি।’

তথ্যমন্ত্রীকে টেলিভিশন মালিক ও সম্প্রচার সাংবাদিকদের অভিনন্দন:

বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার বাস্তবায়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে দেশের টিভি চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অভ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটকো) এবং টিভি চ্যানেলগুলোতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)। বিজেসি এ নিয়ে লিখিত বিবৃতি দিয়েছে।

বিজেসির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০০৬ সালের ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইনে এ বিধান থাকলেও এর আগে কখোনই এটি কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্তমান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সাহসী পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বিজেসি। এতে দেশি টেলিভিশন চ্যানেল শিল্পের আর্থিক সংকট কমবে এবং উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সম্প্রচারকর্মীরাও এর সুফল পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’

 

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!