গোপালগঞ্জে এ বছর কোরবানীর জন্য ৩০ হাজার পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। করোনার কারণে পশুর হাট না বসায় ও গরু বিক্রি না হওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন গোপালগঞ্জের প্রায় ৪ হাজার খামারি। গত বছর অনেক খামারি লোকসান করেছেন। এবছর কোরবানীতে পশু বিক্রি করতে না পারলে বড় ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকায় রয়েছে তারা।
গোপালগঞ্জে ছোট গরু কিনে দেশীয় পদ্ধতিতে বাড়িতে লালন-পালন করে বিক্রির উপযোগী করে তোলেন প্রান্তিক খামারিরা। এসব পশুর খাবার হিসেবে শুকনো খড়, বিলের কচি ঘাস, ভূসি, কুড়া, খৈল ও চিটাগুড় খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেন। কোন রকম ক্ষতিকারক ওষুধ ব্যবহার না করে তারা পশু পালন করেন।
করোনার কারণে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু লালন পালনে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। অনেক খামারি আবার ঋণ নিয়ে পশু পালন করেন। আশা থাকে কোরবানীতে পশু বিক্রি করে দেনা শোধ করবেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিলখি গ্রামের রিয়াজুর ইসলাম বলেন, আমি গত দশ মাস আগে লাভের আশায় ছোট ছোট ৪টি ষাড় কিনি। এই কয় মাস অনেক কষ্ট করে গরু লালন পালন করেছি। আশা ছিল কোরবানীতে গরু বিক্রি করে লাভের টাকায় সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরবে।কিন্তু করোনার কারণে যদি হাট না বসে তাহলে বিরাট ক্ষতি হবে।
সদর উপজেলার মোঃ শাহ আলম বলেন, এবছর কোরবানী উপলক্ষ্যে আমি দেশী বিদেশী জাতের ৪০ টি গরু লালন পালন করেছি। এখন করোনা মহামারির কারণে যদি হাট না বসে আর গরু যদি বিক্রি করতে না পারি তাহলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
সদর উপজেলার নিলখি গ্রামের লাইলি বেগম ও নজরুল ইসলাম বলেন, দেশী জাতের কযেকটি গরু কিনে ৮/১০ মাস শুকনো খড়, ভূসি, কুড়া, খৈল ও চিটা গুড় খাইয়ে লালন পালন করছি। কিন্তু করোনা মহামারিতে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু লালন পালনে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। এখন যদি গরু বিক্রি করতে না পারি তাহলে আরো এক বছর পালন করতে হবে। এতে আমাদের অপরিমাণ ক্ষতি হবে।
গোপালগঞ্জ প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা আজিজ আল মামুন জানান, গোপালগঞ্জে গরুর খামারী রয়েছে ৩ হাজার ৭শ’ জন।তাদের উৎপাদিত পশুর পরিমাণ রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। জেলায় চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৯ হাজার। খামারীরা খড়, ভূসি, কুড়া, খৈল খাইয়ে গরু মোটাতাজা করে থাকেন। করোনা সংক্রমণ রোধ কল্পে প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারীদের উৎপাদিত গবাদি-পশু ক্রয় বিক্রযের জন্য অনলাইন প্লাটফরমের ব্যবস্থা করেছেন। এবার করোনার কারণে খামারীদের পশুর ছবি, দাম, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার দিয়ে অনলাইনে পশু বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি এ ব্যবস্থায় খামারীরা তাদের পশুর বিক্রি করতে পারবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম