স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, নতুন কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই তরুণ এবং অনেকের আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হচ্ছে। রবিবার ঢাকার শ্যামলীতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, আগের ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন রোগে আক্রান্তরাই বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু, এখন আমরা দেখছি, তরুণ ও সুস্থরা আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, গত দুই মাসে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য তিনি আইসিইউ বেডের কোনো অনুরোধ পাননি। কিন্তু, গত কয়েকদিনে হাসপাতালে আইসিইউ বেডের ঘাটতির অভিযোগে তিনি অসংখ্য কল পেয়েছেন।
তিনি টিবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেন, ‘প্রস্তুত থাকতে হবে… যেসব আইসিইউ বেড আছে সেগুলো কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য আপনার প্রস্তুত রাখুন।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে দেশের সব বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক এবং ঢাকার কোভিড-১৯ হাসপাতালের পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাদের সমস্যার কথা শোনা হয়েছে এবং সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে দুই মাসের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল আটটা থেকে রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত) দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্তের হার সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ২০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। করোনায় সংক্রমিত ১ হাজার ১৫৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। একই সময়ে মারা গেছেন ১৮ জন।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। এর আগে ১০ জানুয়ারি রোগী শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।
এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৫ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ৫৪৫ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১১ হাজার ৬৯৫ জন।
২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে। দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘোষণা আসে ১৮ মার্চ।
দেশে সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। তবে চার সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এদিন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি