নির্বাচন বয়কটের নামে একটি দল বাসে আগুন দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে মুজিববর্ষের বিশেষ অধিবেশনে জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
কোন দলের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘কোনো কথা নাই, বার্তা নাই-হঠাৎ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস। কেন? কী স্বার্থে? কীসের জন্য? নির্বাচন হয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন করার নামে অংশগ্রহণ করে। টাকা-পয়সা যা পায় পকেট দিয়ে থুইয়ে দেয়। ইলেকশনও করে না, এজেন্টও দেয় না। কিছুই করে না। মাঝপথে ইলেকশন বয়কটের নামে বাসে আগুন দিয়ে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এটার উদ্দেশ্যটা কী?’
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম যে, পদ্মাসেতু নিজেদের অর্থায়নে হবে, আল্লাহর রহমতে সে কাজও আমরা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গঠন করার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোরায় পৌঁছে দিয়েছি। হয়তো জাতির পিতা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে করতে পারিনি। কমিউনিটি ক্লিনিক করে আমরা চিকিৎসাসেবা মানুষের কাছে নিয়ে যেয়ে তাদেরকে আমরা বিনাপয়সায় ৩০ প্রকারের ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি। সেই সাথে নতুন উৎপাত যখন আসলো করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা ব্যাহত হলো আমাদের প্রচেষ্টা। এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক। তারপরও আমরা বলব, আমরা সেটা মোকাবেলা করে চলছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে করোনা সামলাচ্ছি, অন্যদিকে অর্থনৈতিক গতিটা যাতে সচল থাকে তার ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা বিশেষ প্রণোদনাও দিয়েছি। আমরা বাজেটের ৪ শতাংশ প্রণোদনা দিয়েছি। টাকা পয়সা যখন যেখানে যা দরকার তা দিয়ে আমরা জীবনযাত্রা যাতে সচল থাকে সেই ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থা করছি। আজকে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হচ্ছে। আমরা এডভান্স টাকাপয়সা দিয়ে ভ্যাকসিন কেনার ব্যবস্থা করে রেখে দিয়েছি। যাতে ভ্যাকসিন যখনই চালু হবে তখনই যাতে নিতে পারি, আমাদের মানুষকে দিতে পারি সে ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিয়েছি। যখন যা প্রয়োজন তা আমরা করে যাচ্ছি। তাহলে অভিযোগটা কোথায়? সেটাই তো বড় প্রশ্ন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এজন্য যে তারা ভোট দিয়ে আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে বলেই আমরা দেশসেবার সুযোগ পেয়েছি, সরকার গঠনের সুযোগ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেরিয়েছেন, চষে বেরিয়েছেন। এজন্য তিনি সব জানতেন। আর সেটা জানতেন বলেই এদেশের মানুষের ভাগ্যটা কীভাবে পরিবর্তন হয়, সেটার বিষয়ে তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন, এদেশের মানুষের জন্য তিনি কাজ করতে চেয়েছিলেন। আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি, সেই চেষ্টাটাই করেছি। এদেশের মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন করা যায় তার চেষ্টা করেছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু নির্বাচনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন চেয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা প্রহসন করে করে নির্বাচনের সিস্টেমটাই নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, একটা সিস্টেমে নিয়ে আসতে, কিন্তু এটা তো হয়ে গেছে। এটাই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সে চেষ্টাটাই করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমি বলব, গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, শোষিতের গণতন্ত্র কায়েম করা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রিকরণ করে তৃণমূল পর্যায়ে যে ভাগ্য পরিবর্তন হয় সেটা ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। আমরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। ’
খুলনা গেজেট / এমএম