‘এসো আলোকিত মানুষ হই’-এই স্লোগান নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় উদ্বোধন করা হল দুটি সেলুন পাঠাগারের। শনিবার সকালে জ্ঞানের আলো পাঠাগারের উদ্যোগে উপজেলার রামশীল ও ত্রিমুখী বাজারের ২টি সেলুনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কথাসাহিত্যিক ও কাস্টমস এর অতিরিক্ত কমিশনার অরুণ কুমার বিশ্বাস। রামশীল বাজারের রিজল রায় ও ত্রিমুখী বাজারের লিটন সরকারের সেলুনে পাঠাগার উদ্বোধনের পরই দেখা যায় বই প্রেমীদের ভিড়।
জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডলের সভাপতিত্বে সেলুন পাঠাগার উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মলয় বালা। এ সময় রামশীল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন বালা, টিম লাইফ সাপোর্টের টিম লিডার শান্ত দাস, সরফুজ্জামান দাড়িয়া, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক মলয় বালা বলেন, সেলুনের মত জায়গায় পাঠাগার স্থাপন একটি ভিন্নধর্মী আয়োজন। প্রযুক্তির উৎকর্ষতা বাড়ায় বর্তমান সময়ে বই পড়ার আগ্রহ অনেক কমে গেছে। বই পড়ার জন্য পাঠক সৃষ্টি করতে ব্যতিক্রমী এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আশা করি পাঠক তৈরিতে জ্ঞানের আলো সেলুন পাঠাগার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কথা সাহিত্যিক অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, বইপড়ার মাধ্যমে মানুষের আত্মিক অবস্থার উন্নতি সাধিত হয়। বই পড়া এখন শুধুমাত্র অবসরের বিনোদনের মাধ্যম নয় বরং এটি এখন আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। দুশ্চিন্তা, দুঃখ বোধ, মানসিক ও শারীরিক যন্তনা আমাদের কর্মস্পৃহা ও সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য বই-ই হতে পারে অন্যতম নিয়ামক।
জ্ঞানের আলো পাঠাগারের সভাপতি সুশান্ত মন্ডল বলেন, আমাদের জীবসত্তা জাগ্রত থাকলেও মানবসত্তা জাগ্রত করার সিঁড়ি হচ্ছে বই। আমাদের বই পড়ার নিয়মিত অভ্যাস তৈরি করতে হবে। পাঠাক বিমুখতা দূর করতে ও বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সেলুনে পাঠাগার স্থাপন করার প্রয়াস। নরসুন্দরদের কাছে নিজেদের বাহ্যিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে সেলুনে যায় নানান বয়সের মানুষ। অনেক সময় ঘন্টা খানেকও অপেক্ষা করতে হয়। এ সময়টুকু যাতে বই পড়ে কাজে লাগাতে পারে সেই লক্ষে কোটালীপাড়া উপজেলার সকল এলাকায় সেলুন পাঠাগার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জ্ঞানের আলো পাঠাগার। আজ শনিবার তারই অংশ হিসাবে দুটি সেলুনে পাঠাগার স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হল এই কার্যক্রমের।
খুলনা গেজেট/এনএম