চলমান কোটা আন্দোলনে “সারাদেশে শান্তিপূর্ণ কোটা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে” বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে বিশাল ছাত্র সমাবেশ ঘটে এবং পরে মিছিল নিয়ে তারা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এসময় ‘আমার সোনার বাংলায় কোটা প্রথার ঠাঁয় নায়’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, শিক্ষার্থীদের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে,‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করে তোলে।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা জানান,কোটা প্রথার সংস্কার সকল শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। একটি যৌক্তিক এবং বৈষম্য বিরোধী দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে চলতে থাকা আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের চড়াও হওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ হামলার প্রতিবাদস্বরূপ আজকে আমাদের এই কর্মসূচি। আগামীকাল এ কর্মসূচি থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে এটির উপর চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা হাইকোর্টে রিট করে। রায়ে হাইকোর্ট সরকারী পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে, এবং কোটা পুনর্বহাল হয়। পরবর্তী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবার কোটা বিরোধী আন্দোলনের ডাক দেয়। এ প্রেক্ষিতে আবার রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা কোন ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানবে না জানিয়ে আবারও বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়। এ দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে সড়ক পথ ও রেলপথ অবরোধ করে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি চালিয়ে যেতে শুরু করে। যার ফলে জনদুর্ভোগ শুরু হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডিএমপি কমিশনার শিক্ষার্থীদের সড়ক ছাড়ার আহ্বান জানান এবং কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দেন।
গতকাল এক ভার্চুয়াল মিটিং ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আদালতের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত এবং আদালতের নির্দেশনা মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার চেষ্টা করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে সেটি বরদাস্ত করা হবে না।’
খুলনা গেজেট/এএজে