খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা
বিডি জমা দেয়নি কেউ

কেশবপুরে আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের অভিযান অনিশ্চিত

কেশবপুর প্রতিনিধি

কেশবপুরে আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের অভিযান সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ৩১ জন মিল মালিক আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহের অনূকুলে চুক্তি অনুযায়ী কেউ বিডির টাকা জমা দেয়নি। পক্ষান্তরে গত বোরো মৌসুমে গুদামে চাল জমা না দেওয়ার কারণে ৩৪ জন মিল মালিককে আমন মৌসুমে চাউল সংগ্রহের অভিযান হতে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কেশবপুরে গত বোরো মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২ হাজার ৪৫৩ মেট্রিক টন। যার অনূকুলে গুদামে ধান ক্রয় হয়েছিলো মাত্র ৬৪ মেট্রিক টন। পক্ষান্তরে কেশবপুরে বোরো মৌসুমে চাউল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন। ৫০ জন লাইসেন্সধারী মিল মালিকের মধ্যে মাত্র ৩১ জন মিল মালিক ৮৪৬ দশমিক ৩০ মেট্রিক টন চাউল জমা দেন। এর মধ্যে ২৬ জন মিল মালিক আংশিক ও ৬ জন মিল মালিক সম্পূর্ণ বরাদ্দের চাউল জমা দিয়েছেন। সরকারি নির্ধারণের মূল্য চেয়ে বাজার দর বেশী হওয়ার কারণে মিলাররা ধান ও চাউল কেউ খাদ্য গুদামে জমা দিতে পারেননি।

এদিকে চলতি আমন মৌসুমে কেশবপুর খাদ্য গুদামে চাউল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৬৪ মেট্রিক টন। যার সংগ্রহের শুরু হবে চলতি সনের ৩১ নভেম্বর হতে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নিয়ম অনুযায়ী খাদ্য গুদামে মিলারদের চাউল দিতে হলে সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনূকুলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে বিডি জমা দিতে হয়। যে বিডি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হলো ২৬ নভেম্বর।

সূত্র জানায়, ২৬ নভেম্বরের মধ্যে কেশবপুরে ৩১ জন মিলারের কেউ বিডি জমা দেয়নি। যার কারণে আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে চাউল সংগ্রহের অভিযান সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বোরো মৌসুমে চাউল জমা দিতে না পারা সোনালী রাইস মিলের মালিক আমজেদ হোসেন সরদার জানান, বোরো মৌসুমে খাদ্য গুদামে চাউল সংগ্রহের অনূকুলে তিনি ৯৬ দশমিক ৬৭ মেট্রিক টন চাউল জমা দেওয়ার বরাদ্দ পান। যার অনূকুলে বস্তার মূল্যসহ ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বিডি জমা দেন। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগতভাবে অসুস্থ ও সরকার নির্ধারণের মূল্যের চেয়ে বাজারদর বেশী থাকার কারণে খাদ্য গুদামে চাউল দিতে পারেন নি।

একই কারণে কেশবপুরে আরও ২৪ জন মিল মালিক কোন চাউল জমা দেয়নি। তিনি আরও জানান, গত বোরো মৌসুমে চাউল সংগ্রহের অনূকুলে যে বিডি জমা দেওয়া হয়েছে ওই বিডি এখনও পর্যন্ত আমাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়নি। এমনকি ফেরত দেওয়ার সময় ২ শতাংশ হারে টাকা সরকার কেটে নেবেন বলে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানান।

এ ব্যাপারে কেশবপুর মিল মালিক সমিতির সভাপতি অহিদুজ্জামান বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, বোরো মৌসুমে খাদ্য গুদামে ২৪ জন মিল মালিক তাদের কোটার চাউল জমা না দেওয়ার কারণে আমন মৌসুমে চাউল সংগ্রহের অভিযানের ক্ষেত্রে ২৪ জন মিল মালিকের লাইসেন্স সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এবং বর্তমান আমন মৌসুমে সরকার নির্ধারণের মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশী হওয়ার কারণে মিলাররা দারুণভাবে ক্ষুব্ধ হওয়ায় আমন মৌসুমের অনূকুলে কেউ বিডির টাকা জমা দেয়নি।

কেশবপুরে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, সরকার চলতি আমন মৌসুমে চাউল ক্রয়ের মূল্য নির্ধারণ করেছেন ৩৭ টাকা। পক্ষান্তরে কেশবপুরে বেসরকারিভাবে চাউল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। যার কারণে হয়তবা কোন মিল মালিক চলতি মৌসুমে বিডির টাকা জমা দিচ্ছে না।

বিডির টাকা হতে ২ শতাংশ কেটে নেওয়ার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুক্তি অনূযায়ী বিডি ফেরত নেওয়ার সময় ২ শতাংশ কেটে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সেটা কেটে নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রধান অফিস সহকারি উজ্জ্বল কুমার দাসের সঙ্গে মুঠোফোনে ০১৭১২-৭১৩৯৬৫ নাম্বারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বারংবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!