খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  মার্কিন শ্রম প্রতিনিধি দল ঢাকা আসছে আজ

কেন সোশ্যাল ক্রাউড ফান্ডিং করবেন

মেহেদী হাসান বাপ্পী

বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে সোশ্যাল ক্রাউড ফান্ডিং বিষয়ে খুব বেশি ধারণা না থাকলেও, ২০২০ সালে এই ইন্ডাস্ট্রির বৈশ্বিক আকার ১৭.২ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৬ সালে যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩৪.৬ বিলিয়ন ডলার। তবে সোশ্যাল ক্রাউড ফান্ডিং ধারণায় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। অর্থনীতির ভারসাম্য বিবেচনায় বাংলাদেশ ভারতের থেকে অনেক বেশি স্থিতিশীল কিন্তু ক্রাউড ফান্ডিং এর দিক থেকে এখনো অনেক পিছিয়ে। বর্তমানে এশিয়ায় ক্রাউড ফান্ডিং ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে চীন।

কোনো প্রজেক্টে অনেক সংখ্যক সাধারণ মানুষের অল্প পরিমাণ বিনিয়োগ করা টাকায় ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়া এবং একটি সময় পর সেই অর্থ লাভসহ সাধারণ মানুষের কাছে ফেরত দেওয়ার কৌশল মূলত সোশ্যাল ক্রাউড ফান্ডিং ধারণার মূলভিত্তি। ১৯৯৭ সালে ক্রাউড ফান্ডিং ধারণার থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত বিশ্বের অনেক ব্যবসা ক্রাউড ফান্ডিং এর উপর নির্ভরশীলতা থেকে সফলতা পেয়েছে এবং আমাজন, আলীবাবা এর মত প্রতিষ্ঠান ক্রাউড ফান্ডিং এর মাধ্যমেই বর্তমান পর্যায়ে পৌছেছে। একটি প্রতিষ্ঠান তার শুরুতে যথেষ্ট ফান্ডিং না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে একটি অসাধারণ আইডিয়া ব্যর্থ হয়। সাধারণত স্টার্টআপ সম্পর্কিত তথ্য খুব কম মানুষের কাছে ছড়ায়। স্টার্টআপ বিষয়ে সরকারি নীতিনির্ধারণী মহলের প্রচেষ্টার ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া সরকার কর্তৃক স্টার্টআপ এবং ক্রাউড ফান্ডিং এর বিষয়ে আরো আন্তরিকতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংক এর একজন ডেপুটি গভর্নর একটি জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকায় মত দিয়েছেন, ক্রাউড ফান্ডিং বা এই ধারণার সাথে সংশ্লিষ্ট প্লাটফর্মগুলো হ্যাকার এবং সাইবার অপরাধীদের আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে যথেষ্ট নীতিগত কার্যক্রম প্রয়োজন।

বাংলাদেশে ক্রাউড ফান্ডিং এর মূল সমস্যা- সাধারণ মানুষের মধ্যে ফান্ডিং নিয়ে ধারণার ঘাটতি। টাকা দান এর ধারণা বাংলাদেশে জনপ্রিয় হলেও ক্রেডিট অথবা বিনিয়োগ সংক্রান্ত ক্রাউড ফান্ডিং ধারণা এখনও সেই অর্থে বিকাশ লাভ করেনি। ইতোপূর্বে ঘটা বিভিন্ন এমএলএম প্রতারণার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগের প্রতি সাধারণ মানুষের একধরনের অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এ অবিশ্বাস এর কারণে সাধারণ মানুষ স্টার্টআপ কিংবা কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইনভেস্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করেনা। যদিও স্টার্টআপ এর ক্ষেত্রে মুনাফা বা লাভের সুযোগ অনেক বেশি এবং এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চলমান। স্টার্টআপে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা ফান্ডিং করে একজন ব্যক্তি তার ইনভেস্টমেন্ট এর প্রায় দেড় থেকে আড়াই গুণ টাকা লাভ হিসেবে পেতে পারে।

বাংলাদেশ সরকার ইনোভেশন, ডিজাইন এবং ইন্টারপ্রেনিউরশীপ একাডেমী (আইডিয়া) প্রজেক্টের মাধ্যমে স্টার্টআপ গুলোকে উপযুক্ত দিকনিদের্শনা এবং অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র পরিসরে ফান্ডিং এর ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে এতো বাধা বিপত্তি সত্তে¡ও বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ‘একজন কবির মৃত্যু’ নামে একটি চলচ্চিত্র ক্রাউড ফান্ডিং ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশে রয়েছে সোশ্যাল ক্রাউড ফান্ডিং এর সুদৃঢ় ভবিষ্যৎ।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (২০১৯) এর তথ্যমতে, বাংলাদেশে ৯১.৮১৮ মিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ বাংলাদেশের লোকসংখ্যার প্রায় ৫৬% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। কিন্তু এই বিপুল সংখক মানুষ এখনও সোশ্যাল ক্রাউড ফান্ডিং ধারণা বিষয়ে অবহিত নয়। এদেরকে ব্যাবসার এ ক্ষেত্র সম্পর্কে সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করলে, এই খাত হতে পারে বিপুল সম্ভাবনাময়। বর্তমানে খুলনাতে ‘ইজিরাইড বাংলাদেশ’ সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন এই ধারনার বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে।

কেনো আপনি ক্রাউড ফান্ডিং করবেন?
– অর্থ এর পরিমাণ কম হওয়ায় ঝুঁকি কম; কিন্তু লাভের পরিমাণ অনেক বেশি।
– সহজেই আপনি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে ক্রাউড ফান্ডিং ক্যাম্পেইন এ ইনভেস্ট করতে পারবেন।
– বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনিও কোম্পানির আংশিক অংশীদারিত্ব নিতে পারেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!