খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬
ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেনের মেয়াদ শেষ ১২ আগস্ট

কে হচ্ছেন কুয়েটের সপ্তম উপাচার্য?

একরামুল হোসেন লিপু

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) একটি অন্যতম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) বাস্তবায়নে ৪৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কুয়েটের অবস্থান তৃতীয়। নাসার স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কুয়েট শিক্ষার্থীদের টিম।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) থেকে ২০০৩ সালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকেই উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার প্রচলন রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেনকে ৪ বছরের জন্য কুয়েটের ষষ্ঠ ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। প্রেসিডেন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোঃ আবদুল হামিদ এ নিয়োগ প্রদান করেন। সে হিসেবে আগামী ১২ আগস্ট বর্তমান ভিসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইন অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে গ্রেড-১ তালিকাভুক্ত অধ্যাপকরাই ইতিপূর্বে কুয়েটের উপাচার্য হয়েছেন।

তবুও কে হচ্ছেন কুয়েটের সপ্তম উপাচার্য? এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে সরব আলোচনা।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, কুয়েটের পরবর্তী উপাচার্যের তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন বর্তমান উপাচার্য এবং কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন। এরপরই আলোচনায় রয়েছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার। অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ। এদের মধ্যে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন কুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বাকী ৩ জন রুয়েটের শিক্ষার্থী।

কুয়েটে অধ্যায়নরত এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা নিয়ম অনুযায়ী এবং জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে কুয়েটের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই যেনো উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়। যদিও এর আগে বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এর দুই মেয়াদে কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের দৃষ্টান্ত রয়েছে।

কুয়েটে বর্তমানে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে গ্রেড-১ তালিকাভুক্ত ২৮ জন অধ্যাপক রয়েছেন। এদের মধ্যে কুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রয়েছেন ১০ জন। যারা সবাই গ্রেড-১ তালিকাভুক্ত শিক্ষক। এরা হলেন : মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার আফতাব হোসেন। (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ২), অধ্যাপক ড. এএনএম মিজানুর রহমান (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ৩), সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএমএ হাশেম (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ৬), সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী হামিদুল বারী (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ৮), ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহা. রফিকুল ইসলাম (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ১২), অধ্যাপক ড. আশরাফুল ভূঁইয়া (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ১৫), অধ্যাপক ড. আবদুর রফিক (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ১৬), সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম (জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নং ১৭), অধ্যাপক ড মুহাম্মদ শাহজাহান আলী (জৈষ্ঠতার ক্রমিক নং ৩৪)।

সূত্র মতে, গত চার বছরে কুয়েটে অ্যাডহক এবং মাষ্টাররোলে তেমন কোনো নিয়োগ হয়নি। ফলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল না। এ সময়ে কুয়েটের ছাত্র রাজনীতি পরিচালিত হয়েছে সুশৃঙ্খলভাবে। চালু হয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। আজ ১০ আগস্ট ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ এর বিষয়টি সিন্ডিকেটে অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও আদান- প্রদানের লক্ষ্যে বিদেশী ২০ বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশীয় ৪ টি প্রতিষ্ঠানের সংগে কুয়েটের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সহ উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বেশ। করোনা মহামারীতে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম সচল ছিল। কুয়েটের এলামনাই এসোসিশন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা হয়েছে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্নার। শিক্ষক কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জ্ঞান ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কনফারেন্স। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মতো। হাই ইমপ্যাক্ট জার্নালে রিসার্চ পেপার প্রকাশের জন্য কুয়েটে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে ভাইস- চ্যাঞ্জেলর এওয়ার্ড। মুজিব শতবর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হয়েছে সংবর্ধনা এবং প্রকাশিত হয়েছে মুজিববর্ষের স্মরণিকা ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’।

কুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ড. আবু জাকির মোর্শেদ বলেন, কুয়েট থেকে যারা গ্র্যাজুয়েশন করেছেন সেসব শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি নিয়োগ হলে যে ডেডিকেশন নিয়ে কাজ করবে অন্যরা হয়তো অতোটা করবে না।

এ বিষয়ে কুয়েটের বর্তমান উপাচার্য ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার পিতা একজন শিক্ষক ছিলেন। আমিও একজন শিক্ষক। আমার দায়িত্বকালে চেষ্টা করেছি শিক্ষকতার জায়গা থেকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ঠিক রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাস্তবিক প্রয়োগ ঘটানোর। যার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!