কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল হত্যার দায়ে ৪ জনকে আমৃত্যু ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরের দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। রায় প্রদান শেষে পুলিশের কঠোর পাহারায় তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে ওয়াসিম রেজা (পলাতক), ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাটদাহ গ্রামের আলী জোয়ার্দ্দারে মানিক জোয়ার্দ্দার (পলাতক), দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের মৃত নুরু বিশ্বাসের ছেলে হোসেল রানা।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া মশান গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে ইদ্রিস ওরফে মোটা জসিম (পলাতক), খন্দকার রবিউল ইসলামের ছেলে খন্দকার তৈমুল ইসলাম বিপুল (পলাতক), নুর বিশ্বাসের ছেলে ফারুক চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মতিমিয়া রেলগেট চৌড়হাস এলাকার খন্দকার মোছাদ্দেক হোসেন মন্টুর ছেলে উল্লাস খন্দকার, উদিবাড়ী আমিরুল ইসলামের ছেলে মনির (পলাতক), পূর্ব মজমপুর মৃত আব্দুল খালেক চৌধুরীর ছেলে বিপুল চৌধুরী, দৌলতপুর উপজেলার পচা ভিটা গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে আ. মান্নান মোল্লাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং হত্যাকাণ্ডের সহিত জড়িত থাকায় আরও ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে আদেশ দেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর হোসেন মুকুল ঢাকা মহানগরীর মিরপুর এগ্রিকালচারাল ওয়ার্কশপ এন্ড ট্রেনিং স্কুলের মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিল। বিগত কয়েক মাস ধরে সুমী নামে এক মেয়ের সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সুযোগকে কাজে লাগান সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
২০০৯ সালে অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখে বিকেল পাঁচটার সময় জাহাঙ্গীরকে বিভিন্নভাবে প্রলোভিত করে অপহরণ করে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামে ডেকে আসেন তারা এবং জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যদের অপরিচিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে ছাড়াতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে মুক্তিপণের দাবিকৃত টাকা পেলে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসের ২৫ তারিখে রাতের বেলায় উপরোক্ত আসামিরা জাহাঙ্গীর হোসন মুকুলকে চর শালিমপুর হিসনানদীর পাড়ে ফারুক চেয়ারম্যানের জমিতে এনে সাক্ষ্য প্রমাণ গোপন করার লক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখেন।
এ বিষয়ে ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখে দৌলতপুর থানায় তার বড় ভাই ইলয়াচ কবির বকুল বাদী হয়ে ১৬ জন আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ মার্চে তদন্তকারী কর্মকর্তা দণ্ডবিধির ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। বাকি দুই আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়। প্রকাশ থাকে যে, উপরোক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি হত্যা মামলা আছে বলে আদালত জানায়।
খুলনা গেজেট/কেএ