কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে যৌতুক না পেয়ে সোনালী খাতুন (২২) নামের এক স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী শফিকুল ইসলামের (২৬) বিরুদ্ধে। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে সোনালীকে নিয়ে গেলে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সুন্দাগ্রামে স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এতে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার।
নিহত সোনালী খাতুন কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগরসাওতা গ্রামের পূর্বপাড়ার আনিস উদ্দিনের বড় মেয়ে। সোনালীর স্বামী শফিকুল ইসলাম কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সুন্দাগ্রামের সিরাজ আলী।
প্রায় চার বছর আগে পারিবারিকভাবে সোনালী খাতুনের সঙ্গে সিরাজুলের বিয়ে হয়। অনিক নামের দুই বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে তাদের।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় সোনালী খাতুনকে মারধর করতেন শফিকুল। সোনালীর বাবা একজন গরিব। অভাবের সংসার হলেও মেয়ের সুখের দিকে চেয়ে বহুবার জামায়ের যৌতুকের দাবি পূরণ করেন। সর্বশেষ যৌতুকের টাকা না পেয়ে শুক্রবার রাতে সোনালীকে নির্মম নির্যাতন করেন শফিকুল।
শনিবার ভোরে স্থানীয়রা সোনালীকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহতের ভাই উজ্জ্বল বলেন, যৌতুকের দাবিতে আমার বোন সোনালীকে বিয়ের পর থেকেই নির্মমভাবে নির্যাতন করত শফিকুল। শুধু সোনালীর মুখের দিকে অভাবের পরও বহুবার যৌতুকের দাবি পূরণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দাবি করা যৌতুক না পেয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে সোনালীকে হত্যা করে। আমার বোনকে হত্যার জন্য শফিকুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, ফাঁসি চাই।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন, ভোরের দিকে হাসপাতালে আনার আগেই সোনালীর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ মর্গে রয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, যৌতুক না পেয়ে সোনালী খাতুন নামে এক স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত স্বামী শফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম