সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সরকারিভাবে বন্দোবস্তকৃত জমিতে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বুলডোজার মেশিন নিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২৪ জুলাই) সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ও দোকান ঘর ভাঙার কাজ অব্যহত রয়েছে।
কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা গ্রামের শেখ আনছার আলীর ছেলে শেখ মাহামুদুর রেজা জানান, মৌতলা মৌজার ৬৩৫৩ হাল দাগের ২০ বর্গমিটার নিজের নামে ও একই দাগে ১৯ বর্গ মিটার জমি গত ৬ জুন তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে বাংলা ১৪২৯ সাল পর্যন্ত বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন। ওই জমিতে তিনি দোকান ঘর নির্মাণ করে মায়ের দোয়া নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে বিকাশ ও ফ্লাক্সি লোড এর দোকান পরিচালনা করে আসছেন। একইসাথে তার বাবার নামীয় দোকানে পৃথক ব্যবসা পরিচালিত হয়।
মাহামুদুর রেজা অভিযোগ করে বলেন, সোমবার সকালে স্থানীয় মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস মোড়ল ও মৌতলা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন লোক বুলডোজার মেশিন নিয়ে তার বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোডের দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তার দোকানে থাকা ক্যাশবাক্স থেকে এক লাখ টাকা লুটপাট করা হয়। বাধা দেওয়ার তাকেসহ তার পক্ষের কয়েকজনকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদ এর বন্দোবস্ত নেওয়া তারই দোকানের পিছনের দুটি প্লট সামনে আনতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে থানায় অভিযোগ করলে উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও তারা মঙ্গলবার সকালেও কাজ অব্যহত রেখেছে। বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরও ভাঙচুর ও লুটপাটের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস মোড়ল জানান, মাহামুদুর রহমান রেজার চাচা আব্দুল্লা পেরিফেরি জমিতে ব্যবসা করতেন। তার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে ভিতরের ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে গলিপথ তৈরির জন্য ওই ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মাহামুদুর রেজা বন্দোবস্ত নিয়ে থাকলে তাকেও একটি দোকান দেওয়া হবে। তবে দোকান ঘর ভাঙার ব্যাপারে তাকে লিখিতভাবে নোটিশ করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজার কমিটি রেজুলেশন করে সকলকে ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম জানান, তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে এসে মাহামুদুর রহমান রেজার দোকান ঘর ভেঙে ফেলার বিষয়টি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানজিল্লুর রহমান জানান, মাহমুদুর রহমান রেজার বন্দোবস্তকৃত দোকান ঘর আইনবহির্ভুতভাবে ভেঙে ফেলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামকে বলা হয়েছে।