প্রতারণার মামলায় জনপ্রিয় উপস্থাপক ও নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাসকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তবে কারাগারে পাঠানোর এক ঘণ্টা পর তাঁকে আবার জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর এই আদেশ দেন।
এর আগে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ দেবাশীষ বিশ্বাস আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে এক ঘণ্টা পরে দেবাশীষ বিশ্বাসের আইনজীবী খন্দকার মুহিবুল হাসান আপেল মামলার বাদীকে চুক্তি অনুযায়ী টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিচারক পুনরায় বিবেচনা করে জামিন মঞ্জুর করেন।
নথি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাংবাদিক লিটন সরকার ইমন বাদী হয়ে দেবাশীষ বিশ্বাস ও তাঁর মা গায়েত্রী বিশ্বাসের নামে প্রতারণার মামলা করেন। মামলার পরে রূপনগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোকাম্মেল হোসেন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত দেবাশীষ বিশ্বাসকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বাদী লিটন সরকার তাঁর সিএন টিভি বাংলা চ্যানেলের জন্য দেবাশীষ বিশ্বাসের মা গায়েত্রী বিশ্বাস প্রযোজিত চারটি বাংলা চলচ্চিত্রের ভিডিও ও গান কপিরাইটের বাণিজ্যিক সত্ত্ব কিনতে আগ্রহী হন। চলচিত্রগুলো হলো- ‘মায়ের মর্যাদা’, ‘শুভ বিবাহ’, ‘অপেক্ষা’ এবং ‘অজান্তে’। পরবর্তী সময়ে আসামিরাও তা বিক্রি করতে আগ্রহী হন। শর্ত মোতাবেক আসামিদের সঙ্গে ‘মায়ের মর্যাদা’ ও ‘শুভ বিবাহ’ সিনেমার কপিরাইট এবং বাণিজ্যিক স্বত্ব এক লাখ টাকায়, ‘অপেক্ষা’ ও ‘অজান্তে’ ৪০ হাজার টাকায় নির্ধারিত হয় এবং লিটন সরকার ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই আসামিদের নগদ টাকা দেন।
চুক্তির শর্ত মতে ৬০ বছরের জন্য বাদী লিটন সরকার কপিরাইটের বাণিজ্যিক স্বত্ব লাভ করেন। আসামিরা আর কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে চারটি ছবির কপিরাইট ইতোপূর্বে বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করেননি বলে জানান। বাদী সেগুলো তাঁর সিএন টিভি বাংলা ইউটিউবে আপলোড করেন। কিন্তু ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কপিরাইট অনুযায়ী চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়।
পরে বাদী লিটন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এ চারটি চলচ্চিত্র আসামি দেবাশীষ বিশ্বাস ২০১৭ সালে অন্য দুজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। যার কারণে ইউটিউব চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ছবিগুলো আপলোড করার পর লিটন সরকার ইমনের চ্যানেল বন্ধ করে দেয়। বাদী ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দলিলপ্রাপ্ত হয়ে নিশ্চিত হন, আসামিদের দ্বারা তিনি সুস্পষ্ট প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং তারা অন্যায়ভাবে অর্থ আত্মসাতের জন্য চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছেন।
খুলনা গেজেট/কেএম