খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু
  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১৫, আহত ৬০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে শিয়ালদহের দিকে সোমবার (১৭ জুন) সকালে রওনা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানি স্টেশনের কাছে সকাল ৮টা ৫০ মিনিট নাগাদ আচমকা ওই ট্রেনে পিছন দিক থেকে একটি মালগাড়ি এসে ধাক্কা মারে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চারটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। তার মধ্যে অন্তত দু’টি কামরা মালবাহী। এখনও পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সঙ্গে ৬০-এর বেশি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। খবর আনন্দবাজার প‌ত্রিকা।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৬০ জন। তবে রেল সূত্রে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা আট। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ির চালক মৃত।

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তাঁর দফতর।

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নিয়ে পোস্ট করে‌ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স হ্যান্ডলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি।

এ‌দি‌কে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার ফলে কলকাতা-শিলিগুড়ি রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে। রাজধানী এক্সপ্রেস, বন্দেভারত এক্সপ্রেস-সহ বেশ কিছু ট্রেনের গতিপথ বদল করা হয়েছে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের আটকে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের তরফে বাস পরিষেবার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আপাতত ১০টি বাস দুর্ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে বলে জানান উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার বিকেল থেকে শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে শিলিগুড়ি-কলকাতা অতিরিক্ত বাস পরিষেবা চালু থাকবে।’’

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রী জানাচ্ছেন, আচমকা প্রবল ধাক্কা অনুভূত হয় ট্রেনের ভিতরে। এক বার নয়, পর পর চার বার ধাক্কা লাগে। যাত্রীরা একে অপরের উপরে পড়ে যান।

এ‌দি‌কে ফাঁসিদেওয়ায় দুর্ঘটনাস্থলে আসছেন রেলমন্ত্রী। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, তিনি দার্জিলিঙের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও এই দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্সে পোস্ট করেছেন।

ফাঁসিদেওয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নিয়ে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে উদ্বেগ প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘‘এই মাত্র দার্জিলিঙের ফাঁসিদেওয়া এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেলাম। বিশদে এখনও জানতে পারিনি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মালগাড়ি ধাক্কা মেরেছে শুনেছি। জেলাশাসক, এসপি, চিকিৎসক এবং অ্যাম্বুল্যান্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হচ্ছে।’’

এ‌দি‌কে যে লাইনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির সঙ্গে রেল যোগাযোগের প্রধান লাইন সেটাই। ফলে আপাতত দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে দার্জিলিং পুলিশের অ্যাডিশনার এসপি অভিষেক রায় বলেন, ‘‘কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে মালগাড়ি ধাক্কা মেরেছে। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ জন আহত। সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গ্যাসকাটার দিয়ে কেটে মালগাড়ির ইঞ্জিন বার করতে হবে। সামনে একটি জায়গায় অস্থায়ী ভাবে আহতদের নিয়ে গিয়ে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী হাসপাতালে পাঠানো হবে। আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল।’’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রাঙাপানি স্টেশনে ঢোকার আগে সিগন্যালের কাণে দাঁড়িয়ে ছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সেই সময়ে ওই লাইনেই ঢুকে পড়েছিল মালগাড়ি। পিছন থেকে সজোরে সেটি যাত্রিবাহী ট্রেনে ধাক্কা মারে। একেবারে শেষের কামরাটি সংঘর্ষের প্রতিঘাতে উপরে উঠে যায় এবং শূন্যে ঝুলতে থাকে। মালগাড়িটিও লাইনচ্যুত হয়।

এ‌দি‌কে সকাল থেকে শিলিগুড়ি-সহ দার্জিলিঙের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল বৃষ্টি চলছে। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানেও থেকে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

মালগাড়ির ইঞ্জিন কাটতে গ্যাসকাটার নিয়ে এসেছে রেল। তবে ভিতরে আটকে থাকা চালকের সাড়া মিলছে না।

শূন্যে ঝুলছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের একটি কামরা। তার ঠিক নীচে রয়েছে মালগাড়ির ইঞ্জিন। তার ভিতরেই চালক আটকে আছেন বলে জানা যাচ্ছে। তাঁকে উদ্ধার করতে হলে মালগাড়ির ইঞ্জিন কাটতে হবে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!