খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮
খুবির কর্মশালায় উপাচার্য

কাঁকড়া চাষ সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠির বিকল্প কর্মসংস্থান হতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি) ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ‘বাংলাদেশে টেকসই কাঁকড়া চাষে ব্যাকটেরিয়া কি হুমকি?’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সুন্দরবনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কাঁকড়ার ভূমিকা রয়েছে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে কাঁকড়ার পোনা আহরণের ফলে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকার জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে এই ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন ও সরবরাহ করা গেলে কাঁকড়া চাষ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারবে। চিংড়ি চাষের পাশাপাশি কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে আরও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কাঁকড়া চাষ করে চীন, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড সফলতা পেয়েছে। আমাদের দেশেও কাঁকড়া চাষ নিয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন। সুন্দরবনে কি পরিমাণ কাঁকড়া রয়েছে তা নিয়েও এটি জরিপের প্রয়োজন।

উপাচার্য বলেন, কাঁকড়া চাষ সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠির অন্যতম বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। কাঁকড়া চাষের উপর গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আর এই গবেষণা কার্যক্রমের ফলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি পাবে এবং শিক্ষার্থী-গবেষকরা উপকৃত হবেন।

উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে শুরুতে কাঁকড়া নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গবেষণাকারী প্রয়াত শিক্ষক প্রফেসর ড. দিপক কামালকে স্মরণ করেন এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে শিক্ষকদের সক্ষমতা ও নিরলস প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন। একই সাথে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কাজে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভব সহায়তার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য-পরিচালক (ফিশারিজ) ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও সাব-প্রজেক্ট ০২৯ এর কো-অর্ডিনেটর ড. মোঃ জুলফিকার আলী।

সভাপতিত্ব করেন এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রউফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের সহকারী মুখ্য গবেষক এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. গাউছিয়াতুর রেজা বানু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের মুখ্য গবেষক এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. এএফএম হাসানুজ্জামান।

পরে টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন করেন পিএইচডি গবেষক এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ রাশেদুল ইসলাম। গবেষণায় কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ফার্মে, হ্যাচারিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা থেকে কয়েকটি রোগ ছড়ানোর ব্যাপারেও তথ্য উপস্থাপন করা হয়। নিবিড়ভাবে কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে এই ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ব্যাকটেরিয়ামুক্ত কাঁকড়া চাষে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে বিশেষ করে পানি নিষ্কাশন ও প্রবেশনের উপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়। কর্মশালায় শিক্ষক, গবেষক, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, মাঠ পর্যায়ের চাষিসহ সংশ্লিষ্টরা অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইতোমধ্যে কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া তা নিয়ে চলছে বহুমুখী গবেষণা।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!