সাতক্ষীরায় কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলার দ্বিতীয় দফায় স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই)। সকাল ১০টায় সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল এর আদালতে মামলার এজাহার নামীয় সাক্ষী শহিদুল ইসলাম, আনছার আলী ও শওকাত আলী সাক্ষ্য প্রদান করবেন। এরআগে গত ২৯ জুন সাক্ষী ফিরোজ আহমেদ স্বপন এর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন করা হয়।
সাতক্ষীরা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাড. আব্দুল লতিফ জানান, আলোচিত এই দুটি মামলা ২০১৭ সালে সাতক্ষীরার বিচারিক আদালতে চলমান অবস্থায় হাইকোর্টে স্থগীত করেন আসামী পক্ষ। এরপর আসামী এবং রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থিতিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ কামরুল হোসাইন মোল্যার দ্বৈত বেঞ্চ পূর্ণ শুনানী শেষে বিগত ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর উক্ত আদেশ ভ্যাকেট করে তিন মাসের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করার জন্য বিচারিক আদালতের বিজ্ঞ বিচারককে নির্দেশ দেন। কিন্তু করোনা কালিন সময়ে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং রায় প্রস্তুতিতে দেরি হওয়ায় চলতি বছরের পহেলা জুন হাইকোট বিভাগ থেকে উক্ত নথি সাতক্ষীরা আদালতে আসে। ২জুন উভয় পক্ষকে জ্ঞাত করে ১৬ জুন সাক্ষীর জন্য দিন নির্ধারণ করেন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল। কিন্তু দু’টি মামলার একই আসামী ও সাক্ষী থাকায় সমন্বয় করে ২৯ জুন একজনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ১৪ জুলাই পরবর্তী সাক্ষীর দিন নিধারণ করেন আদালত।
মামলাটির ৫০ জন আসামীর মধ্যে একজন কারাগারে মারা গেছেন, ৯জন পলাতক এবং ৪০জনকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। এদিকে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার দিন থাকায় আদালতের বাইরে ও ভিতরে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফ
উল্লেখ্য, উক্ত মামলার আরেকটি পার্ট (হামলা ও ভাংচুর) মামলায় গত বছরের ৪ ফেব্রæয়ারী ৫০ জন আসামীর ৫০ জনেরই বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন সাতক্ষীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এতে ১নং আসামী সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ১০বছরসহ ৩ বছর পর্যন্ত সকল আসামীর বিভিন্ন মেয়াদে দন্ড দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তরা এখন সাতক্ষীরা কারাগারেই আছেন।
প্রসঙ্গত: বিগত ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন কলারোয়ার একজন মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে পৌছালে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের সময় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মী এবং সন্ত্রাসীরা হামলা ভাংচুর মারপিট বোমা বিস্ফোরণ ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়েন। এতে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গীসহ দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এঘটনার এক যুগ পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা হয়।