জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্রলীগের এক কর্মীর গায়ে ধাক্কা লাগার ঘটনায় আরেক কর্মীকে মারধর করার পর সংগঠনের দুটি হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ফুটবল খেলার সময় এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এরই জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ও মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
রাত ৮টার দিকে রড, লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অবস্থান নেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। এসময় তারা বটতলার কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র খালিদ হোসেনসহ কয়েকজন ফুটবল খেলছিলেন। এ সময় মাঠে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন মওলানা ভাসানী হল ছাত্রলীগের কর্মী সৌরভ কাপালি। ফুটবলের পেছনে ছুটতে গিয়ে সৌরভের সঙ্গে ধাক্কা লাগে খালিদের। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে খালিদকে ঘুষি দেন সৌরভ। এরপরেই সেখানে হাজির হন হল দুটির ছাত্রলীগ কর্মীরা। তখন পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
এরপর সৌরভ মোটরসাইকেলে তুলে খালিদকে মওলানা ভাসানী হলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মীর মশাররফ হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা গিয়ে তাকে আটকে দেয়।
সৌরভ কাপালি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে খালিদ হোসেন মার্কেটিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এ ঘটনার জেরে রাত আটটার দিকে রড, লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অবস্থান নেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। তারা বটতলার কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন। পরে মওলানা ভাসানী হলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বটতলায় যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তারা ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় আলোচনা করেন। পরে মীর মশাররফ হোসেন হলের নেতাকর্মীরা সেখান থেকে চলে যান।
এ ব্যাপারে সৌরভ কাপালি বলেন, ‘আমি ফোনে কথা বলার সময় পেছন থেকে ধাক্কা দেয় সে (খালিদ)। এ নিয়ে তার (খালিদের) সঙ্গে কথা বলতে গেলে তার বন্ধুরা তেড়ে আসে। পরে সেখান থেকে আমি চলে আসি। আর কোন ঘটনা ঘটেনি।’
জানতে চাইলে খালিদ হোসেন বলেন, ‘ফুটবল খেলার সময় উনি (সৌরভ) সামনে চলে এলে তাকে হাত দিয়ে সরাতে যাই আমি। তিনি ফিরেই আমাকে ঘুষি মারেন। পরে তার সঙ্গে থাকা অন্যরা আমাকে মারধর করেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘যেহেতু এটা ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সমস্যা তারা এটা নিজেরাই সমাধান করতে চেয়েছে। অভিযোগপত্র না পাওয়ায় কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না। পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটমাট করা হয়েছে।’