বৈশ্বিক মহামরি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। বিশ্বের বিভিন্ন জনপদে নিত্য-নতুন রূপে হানা দিচ্ছে এই মরণঘাতি ব্যধি। এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ৪২ লাখেরও বেশি মানুষ। মারা গেছেন ৩৪ লাখ ৪ হাজারের বেশি।
আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় এসব তথ্য জানা গেছে।
সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে মোট ১৬ কোটি ৪২ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫৪ জনের শরীরে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩৪ লাখ ৪ হাজার ১৫১ জন। আর এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন মোট ১৪ কোটি ২৯ লাখ ৮৫ হাজার ৪৪৫ জন।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪৩৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৫৩৩ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ৭২ লাখ ২ হাজার ৩০৯ জন।
এরপরই রয়েছে ভারত। বেশ কিছুদিন ধরে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ ২৭ হাজার ৯৭০ জনের শরীরে। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫১ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৩ জন।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬১ হাজার ১০৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৬২ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৪১ লাখ ৫২ হাজার ৩ জন।
তালিকার পরবর্তী অবস্থানে থাকা দেশগুলো হলো- তৃতীয় ফ্রান্স, চতুর্থ তুরস্ক, ষষ্ঠ রাশিয়া, সপ্তম যুক্তরাজ্য, অষ্টম ইতালি, নবম স্পেন এবং দশম জার্মানি।
সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম। দেশে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৫৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ১৮১ জনের। সেরে উঠেছেন ৭ লাখ ২৩ হাজার ৯৪ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। চীনে করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে।
করোনা প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ওই বছরেরই ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস ধরে টানা মৃত্যু ও শনাক্ত ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর বছর শেষে কয়েক মাস ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। চলতি বছরের শুরুতে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত অনেকটা কমে আসে। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশেষজ্ঞরা এটাকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলছেন।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে সরকার পর্যায়ক্রমে লকডাউন, বিধি-নিষেধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। গণপরিবহনসহ লোকজনের চলাচল সীমিত রাখতে চলছে চেষ্টা।
খুলনা গেজেট/কেএম