খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
  শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে নিহত ২

করোনায় এশিয়ার ৯ কোটি মানুষ নিঃস্ব

গে‌জেট ডেস্ক

মহামারি করোনার ধাক্কায় ৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মানব উন্নয়নে নিম্নমুখী হয়েছে বিশ্ব। আর এর ছোবলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চরম দরিদ্র লোকের সংখ্যা বেড়েছে। এই অঞ্চলের ৯ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এই মহামারি।

ম্যানিলাভিত্তিক সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে এ উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। ‘বিল্ডিং ফরওয়ার্ড টুগেদার: টুওয়ার্ডস অ্যান ইনক্লুসিভ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাস বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (আগের এশিয়া অঞ্চল) দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করেছে। এটা ধনী-গরিব বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো চরম দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৯ কোটি লোককে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এই মহামারি। ৩২ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে নামিয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, যাদের প্রতিদিনের আয় ১ দশমিক ৯০ ডলারের (বর্তমানে প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ২০ পয়সা হিসাবে ১৬৩ টাকা ৭৮ পয়সা) কম তাদেরকে চরম দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। আর যাদের দিনে উপার্জন ৩ দশমিক ২০ থেকে ৫ দশমিক ৫০ ডলার তারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে বলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির ছোবলে উন্নয়নশীল এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১০ কোটি ৯০ লাখ থেকে বেড়ে ১৬ কোটি ৭০ লাখ হয়েছে, যা বিশ্বের মোট বেকারের ৭০ শতাংশ। মজুরি আয়ের ক্ষতি হয়েছে ৩৪৮ বিলিয়ন থেকে ৫৩৩ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেদনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চালাতে দেশগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তি, ক্ষমতায়ন এবং পরিবেশগত টেকসইয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (ইসক্যাপ), এডিবি এবং জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

এতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য মহামারির প্রভাব বা ধাক্কা এবং ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রাখতে দেশগুলোর সরকার প্রধানদের অনুরোধ করা হয়েছে। এই অঞ্চলের পুনরুদ্ধারের গতিশীলতা যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভর করছে কোভিড-১৯ টিকা, ডায়াগনস্টিকস ও থেরাপিউটিকস এবং সেসঙ্গে সামাজিক সুরক্ষা কভারেজ সিস্টেমের পর্যাপ্ততার ওপর।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট শিক্সিন চেন বলেন, ‘মহামারি আঘাত হানার আগে এসডিজি বাস্তবায়নে দেশগুলো ভালোই অগ্রসর হচ্ছিল। এখন সেটা ব্যাহত হচ্ছে। আর্থিক চাপ এবং ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ নতুন চ্যালেঞ্জে হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাই এসডিজি বাস্তবায়নে দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর প্রতিশ্রুতি পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।

‘এই অঞ্চলের দেশগুলোর সরকার প্রধানদের ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়নের এজেন্ডাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় নিশ্চিত করে জাতীয় পুনরুদ্ধারের কৌশলগুলো পর্যালোচনা ও সংশোধন করতে হবে।

‘নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং অসহায় গরীব জনগোষ্ঠীর চাহিদার দিকে বেশি জোর দিতে হবে।‘

এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চল। এই অঞ্চলে ৫৩টি দেশ অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, জাপান, জর্ডান, কুয়েত, মালদ্বীপ, সৌদি আরব ও সিঙ্গাপুর রয়েছে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!