স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে চলেছে। করোনার সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা উদ্যোগ নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দিন দিন করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকলে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার সময় সূচিতেও পরিবর্তন আসতে পারে।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সারা দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
দেশের করোনা পরিস্থিতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিস্থিতির আলোকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। সরকারের বিধিনিষেধ সত্ত্বেও পর্যটন এলাকাগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানও বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলা, অতিরিক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ও মাস্ক ব্যবহার না করার কারণে করোনা শনাক্তের হার বেড়ে চলেছে।
এর আগে গত ১২ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এবং জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। যদি সংক্রমণ বাড়তে থাকে তবে ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলে অবশ্যই জানিয়ে দেব।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত যে সময় দেওয়া আছে তাতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ৩০ মার্চ খোলার কথা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে খোলার কথা ২৪ মে থেকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খোলার কথা ১৭ মে থেকে। আমরা বরাবরের মতো গত এক বছর যেমন করেছি- এখনো প্রতিদিনই পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের, শিক্ষকদের, কর্মচারীদের এবং অভিভাবকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা সবচেয়ে বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। কাজেই আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
ডা. দীপু মনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছিলেন এই মার্চ মাসেই গত বছর সংক্রমণ হয়েছিল এবং এরপরে বেড়েছিল। কাজেই যদি আমরা দেখি এখনো একটু মনে হচ্ছে ঊর্ধ্বগতি, টিকা এসে যাওয়াতে হয়তো আমাদের সবার মধ্যে কিছুটা শৈথিল্য ভাব দেখা গিয়েছিল। আশা করি, এই যে আবার একটু বাড়ছে, তাতে সবাই আবার সচেতন হবেন। সবাই ভালোভাবে, পাকাপোক্তভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানবেন এবং এটি বাড়বে না।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরবর্তীতে সেই ছুটি কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর সর্বশেষ আগামী ৩০ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক খোলার তারিখ ঠিক করে সরকার।
এদিকে, আগামী ২৪ মে থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে ১৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেওয়ারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।