করোনা ভাইরাসের প্রভাব সর্বত্র। সামাজিক দূরত্ব থেকে শুরু করে সব ধরণের সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছে সচেতন মানুষ। আগামী কোরবানিতে করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন। যার ফলে অনেকেই কোরবানির হাটে না আসার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।
সম্প্রতি জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে এমন তথ্য পেয়েছেন। পাশপাশি চলতি বছর করোনার কারণে কোরবানিতে পশু বিকিকিনি কমার শঙ্কা রয়েছে শতকরা ২০ ভাগ।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের সূত্র জানায়, গত বছর ৪৯ হাজার ৫’শটি বিভিন্ন ধরণের গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মে এ বছর বিকিকিনি বেশি হবে এই লক্ষ্য নিয়েই প্রস্তুতি শুরু করেছিল খামারীরা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাসের কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছে জেলার ৬ হাজার ৮৯০জন খামারী। তাদের ব্যবসায়ের পুঁজি টিকিয়ে থাকা নিয়ে চলছে টানাটানি।
এদিকে খামারীদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার জন্য জেলার ৯টি উপজেলাসহ মেট্রোতে এ বছর ২৮টি পশুর হাট স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং পশুদের সার্বিক তত্ত্বাধায়নের জন্য এসব হাটে কাজ করবে ৩৭টি মেডিকেল টিম।
এছাড়া খুলনায় প্রথমবারের মত অনলাইন এ্যাপসের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিকিকিনির সুযোগ করে দেওয়ারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, খুলনা জেলায় এ বছর কোরবানির পশু বিকিকিনির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫৪ হাজার। গত ২০ জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী জেলার ৬ হাজার ৮৯০জন খামারীর নিকট গবাদিপশুর সংখ্যা রয়েছে ৪৫ হাজার ১৮১টি।
এছাড়া খুলনার পাশ্ববর্তী জেলা এবং উপজেলা থেকে কোরবানির হাটে পশু আসাতে অত্র এলাকার চাহিদা মিটে যায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর কোরবানি দিতে অনীহা বেড়েছে অনেকের। বিশেষ করে কোরবানির পশুর হাটে সামাজিক দূরত্ব নিয়ে শঙ্কা কাটছে না সাধারণ মানুষের।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, এ বছর কোরবানির হাট থেকে পশু কেনার কোন ইচ্ছা নেই। খুলনায় প্রতিনিয়ত যে হারে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে সে তুলনায় হাটগুলোতে সামাজিক দূরত্ব কতখানি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এটা নিয়ে সন্দেহ আছে।
নগরীর লবণচরার খামারী মো: আজহারুল ইসলাম সুমন ও আড়ংঘাটার সরদারডাঙ্গা এলাকার খামারী মো: রাজু আহমেদ বলেন, গরুর দাম এখনই কম যাচ্ছে। কোরবানিতে কি হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মানুষ হাটে না আসলে গরুর দাম আশানুরূপ পাওয়া যাবে না।
খুলনার জেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার এস এম আউয়াল হক বলেন, আমরা উপজেলা পর্যায়ে একটি জরিপ চালিয়ে জেনেছি, চলতি বছর শতকরা ২০ভাগ কোরবানির পশু বিকিকিনি কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে তিনি দাবি করেছেন, খামারীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতিমধ্যে ২৮টি স্থানে কোরবানির হাটসহ অনলাইনে পশু বিকিকিনির জন্য এ্যাপসের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছি।
খুলনা গেজেট/এম.এম.