বাংলাদেশ লেখক শিবির, খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে আজ বিকেলে উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে “শওকত আলী ও আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্যে গণমুক্তির চেতনা” শীর্ষক আলোচনাসভা সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বরকত আলীর পরিচালনায় সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. ইবাইস আমান। পঠিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন, অধ্যাপক আবুল ফজল, শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, সুভাষ সাহা প্রমুখ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, শওকত আলী রচিত ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’, ‘উত্তরের খেপ’, ‘দক্ষিণায়নের দিন’ এবং আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’, ‘খোয়াবনামা’, যুদ্ধপূর্ব ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের সমাজের চালচিত্রের ঐতিহাসিক দলিল।
বক্তাগণ বলেন, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতি ভূষণ, অদ্বৈত মল্লবর্মণের উত্তরাধিকারী শওকত এবং ইলিয়াস আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে নিম্ববর্গের ও প্রান্তিক মানুষদের ক্ষোভ-দ্রোহ-প্রতিবাদ অনেক শক্তিমত্তায় বুনন করেছেন। বিত্তের মধ্যে নিম্ববিত্তের বসবাস, মধ্যবিত্তের দুর্বলতা-সবলতা, নারীর লড়াই-সংগ্রাম, শক্তিমত্তার জায়গা ও সমাজের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধের ক্ষোভকে তাঁরা তাঁদের উপন্যাস ও ছোট গল্পে তুলে এনেছেন। আলোচকগণ আরো বলেন, রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন, বাংলাদেশের রাজনীতির চালচিত্র, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা, যুদ্ধের গল্প, শ্রমজীবী মানুষের ভেতরের তীব্র আকুতি, শোষণ-নির্যাতন, তাঁদের লেখনিতে উঠে এসেছে। সাহিত্যের অর্থমূল্য না থাকলেও তার যে সামাজিক মূল্য আছে এবং সমাজতন্ত্রই যে মানুষের মুক্তির পথ, একথাটি তাঁরা মানুষকে বোঝাতে পেরেছেন। শুধু কথাশিল্পী হিসেবেই নয়, একজন শিল্পীর রাজনৈতিক চেতনা, শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, রাজনৈতিক বক্তব্যকে কী ভাবে উপস্থাপন করতে পারে, শওকত ইলিয়াস তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বক্তাগণ বলেন, শ্রেণিসচেতন ও রাজনৈতিক বোধসম্পন্ন লেখক হিসেবে শওকত ও ইলিয়াস বেঁচে থাকবেন জনগণের লড়াই ও সার্বিক মুক্তির সংগ্রামে।সূত্র : প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/কেএম