কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিন। গত এক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে তিনবার গুলি করা হয়েছে। আতঙ্কে বন্ধ এ নৌপথ। খাদ্য সংকটের সঙ্গে প্রবাল দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা প্রতিটি মুহূর্ত আতঙ্কে পার করছে।
স্থানীয় প্রশাসন বুঝতে পারছে না গুলি মিয়ানমারের জান্তা, নাকি বিদ্রোহীরা করছে? ফলে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এরই মধ্যে বুধবার মর্টারশেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দে আরেক দফা কেঁপে ওঠে সেন্টমার্টিন। আকাশে যুদ্ধবিমানের টহলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় নাফ নদে যুদ্ধজাহাজ ভিড়লে যোগ হয় বাড়তি মাত্রা। এমন অবস্থায় দ্বীপবাসীর প্রশ্ন– কী হচ্ছে সেন্টমার্টিনে?
অবশ্য গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারাও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। মিয়ানমার অস্বীকার করে বলেছে, তারা গুলি করেনি। কিন্তু গুলি তো হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেছেন, নৌযান বন্ধের কারণে সেন্টমার্টিনে নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা সেন্টমার্টিনে যাতায়াতে বর্তমান রুটের বিকল্প খোঁজ করছি। পরে রাতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন বলেছেন, নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে দুটি বিশেষ নৌযানে সেন্টমার্টিনে যাবে খাদ্যপণ্য। আর রোগীসহ যে কোনো জরুরি যাতায়াত হবে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকা হয়ে। বিষয়টি সমন্বয় করবেন টেকনাফের ইউএনও। নৌপথে নিরাপত্তা দেবে কোস্টগার্ড।
দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ জানান, এখানে তারা বন্দি হয়ে আছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আরেক বাসিন্দা জেলা প্রশাসনের বিচ কর্মীদের সুপারভাইজার জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কষ্টের কথা কাকে বলব? কোনো কিছু সমাধান হচ্ছে না। সবাই আতঙ্কিত।’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, পূর্বদিকে মিয়ানমারে রাখাইনের মংডুতে হাসসুরাতা ও মেরুল্ল্যা গ্রাম থেকে বুধবার দিনভর ব্যাপক মর্টারশেলের শব্দ পেয়েছেন তারা। এতে বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। এ সময় আকাশে যুদ্ধবিমান এবং সাগরের জলসীমানায় দেখা যায় মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ। দ্বীপবাসী খুবই আতঙ্কে রয়েছেন। কী হচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না।
খুলনা গেজেট/এইচ