যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজে ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি’র নারীকান্ডে যশোর ও ঝিনাইদহ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় ওসি সাইফুল ইসলামকে ক্লোজড করা হয়েছে। তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সাথে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
সূত্র থেকে জানা যায়, গত ৩০ জুন রাতে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। এক পর্যায়ে স্হানীয় ছাত্রদলের কতিপয় নেতাকর্মী তাকে অবরুদ্ধ ও লাঞ্ছিত করে। তার কাছ থেকে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা ও ডিএসবি পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এরপর ঘটনার গোপন তদন্তে ও ভিডিও ফুটেজ দেখে ডিএসবি পুলিশের কাছে অনেকটাই পরিস্কার হয় ওসি’র অনৈতিক কর্মকান্ড ।
বিষয়টি নিয়ে যশোর ও ঝিনাইদহ পুলিশ প্রশাসনে শুরু হয় তোলপাড়। তেমনি সবার মুখে মুখে রটে যায় এ ঘটনা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনা চলে ওসির রেস্টহাউজে নারীকান্ড।
প্রশাসনিক একটি সূত্র থেকে জানা যায়, প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয় ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গত ৩০ জুন রাতে যে নারীকে নিয়ে যশোরের রেস্ট হাউজে উঠেছিলেন, তিনি তার স্ত্রী নন। এছাড়া ওসি পরবর্তীতে ওই নারীকে তার বান্ধবী বলে পরিচয় দিলেও মহেশপুর থেকে যশোরে এসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউসে সময় কাটানো চাকরি বিধি অমান্য করার শামিল।
যে কারণে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোর্শেদ সোমবার (৭ জুলাই ) তাকে মহেশপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করেছেন। একসাথে তাকে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র ইমরান জাকারিয়াকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে ঝিনাইদহ পুলিশ প্রশাসন ওসি সাইফুলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন, কোটচাঁদপুর সার্কেল এএসপি মুন্না বিশ্বাস ও ঝিনাইদহের কোট ইন্সপেক্টর।
তিন সদস্যের এই কমিটি ইতিমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। তারা ঘটনাস্থল পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেস্ট হাউস, যশোর কোতোয়ালি থানা, যশোর ডিএসবিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেক্টরে কথা বলবেন । ওই কমিটির প্রতিবেদনের পরে পরবর্তী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ঝিনাইদহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ওসি সাইফুলের এই নারী কাণ্ডে যশোর ও ঝিনাইদহ পুলিশ প্রশাসনে হইচই শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে