নড়াইল সদরে মো.আরিয়ান মোল্লা (১৭) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর হাত ও পায়ের রগ কেটে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সদরের কাড়ার বিলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মো. আরিয়ান মোল্লা নড়াইল সদর পৌরসভাধীন মহিষখোলা গ্রামের মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে। সে নড়াইল পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আগামী ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
এ ঘটনার পর আহত আরিয়ানকে নড়াইল সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোরে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন আরিয়ানা, এমন বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে আরিয়ান অভিযোগ করে বলে, ‘মঙ্গলবার দুপুরের পর দাদী ডেকে বলেন আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম পলাশ বাড়িতে আসছেন, তিনি কথা বলবেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে বাড়ির মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলুর দেহরক্ষী তুষার শেখ ও রয়েল বাড়ির মধ্যে থেকে টেনে হিঁচড়ে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নেন। গাড়ির মধ্যে ২ জন নারীও ছিল। নারী দুইজন পুলিশ লাইনসের সামনে নেমে যান। গাড়ির মধ্যে কেউ কোনো কথা না বলে সোজা গোবরা রোড ধরে কাড়ার বিলে নিয়ে যায়।
আরিয়ান আরও বলেন, গাড়ি থেকে নামিয়ে ঘেরের পাড়ে নিয়ে যায় তারা। সেখানে তুষার, রয়েল, এলান কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়। আহত অবস্থায় ভ্যানে করে একা সদর হাসপাতালে পৌছান বলে আরিয়ান ভিডিওতে জানান।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, স্কুলছাত্র আরিয়ানের সঙ্গে শিবশংকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আরিয়ানের পারিবারিক অবস্থা তার প্রেমিকার পারিবারিক অবস্থার থেকে খারাপ। অসম বয়সের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ের পরিবার। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এর সূত্র ধরে হত্যার উদ্দেশে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে আরিয়ানের পরিবার।
নড়াইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হক গনমাধ্যমে বলেন, ‘কোনো ধরনের অভিযোগ থাকলে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে পারতো, স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও মাতবরদের সহযোগিতায় এটার সমাধান সহজেই করা যেত। আমার ওয়ার্ড থেকে এভাবে দিনে দুপুরে একটা ছেলেকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হাত পায়ের রগ কেটে দেয়া, এটা কোনো সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই সম্পৃক্ত থাকুক না কেন, দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে একাধিক টিমের সমন্বয়ে অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো এজাহার দেয়া হয়নি। তদন্তপূর্বক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে আশ্বাস দেন জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/ টিএ