ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের বিভৎস খুনের ঘটনায় সারাদেশে চরমপন্থি ইস্যুতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। হত্যাকারী হিসেবে প্রধান অভিযুক্ত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ আটক ও আনার খুনের স্বীকারোক্তিমূলক বর্ণনা দেয়ার ঘটনায় যশোর পুলিশ চরমপন্থি বলয়গুলোতে অভিযান জোরদার করেছে। সাইফুলকে আটকের পর এমপি আনার হত্যাকান্ডে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
যশোরের মণিরামপুর ও অভয়নগরের অধিকাংশ হত্যাকান্ডে চরমপন্থি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন তথ্য প্রমাণও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে এসেছে। এরমধ্যে গোপন তথ্যে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশ ২৮ মে রাতে যশোরের চাঁচড়ার বাবলাতলা এলাকার একটি মৎস্য খামার থেকে আটক করে শিমুল ভূঁইয়ার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত চরমপন্থি নেতা সাইফুল মেম্বারকে। তার কাছ থেকে ভারতীয় নম্বরের একটি সিম ও মোবাইল এবং ৯ কেজি ৬০ গ্রাম বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। এ কারণে তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে ২৯ মে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। প্রভাষক উদয় শংকর হত্যা মামলাসহ দুটি হত্যা মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সারাদেশে চরমপন্থি ইস্যুতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য পায় ভারতে পালিয়ে থাকা সাইফুল মেম্বার গত ২০ মে ভারত থেকে দেশে ফিরেছে ও যশোরে অবস্থান করছে। এমন তথ্য মেলায় যশোরে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়। এক পর্যায়ে ডিবি পুলিশ তাকে ২৮ মে রাত ৯ টার দিকে যশোর শহরের চাঁচড়া বাবলাতলা এলাকার আদর্শ নার্সারি থেকে আটক করে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে ভারত থেকে ফেরার কথা স্বীকার করে। তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে চালান দেয় পুলিশ। একইসাথে তাকে যুবলীগ নেতা মণিরামপুরের প্রভাষক উদয় শংকর ও খুলনার মিলন হত্যা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখনো হয়েছে।
ডিবি পুলিশের অভিযানিক অফিসার এসআই মফিজুল ইসলাম মফিজ বলেন, আটক সাইফুল চরমপন্থি নেতা ও ঢাকায় আটক শিমুল ভুইয়ার সেকেন্ড ইন কমান্ড। তার চক্রের সদস্যদের ব্যাপারে মণিরামপুর, অভয়নগর এবং খুলনা ফুলতলা অঞ্চলে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে ও অভিযানও চলছে। তিনি বলেন, আটক সাইফুল মেম্বর অভয়নগর উপজেলার রাকিব, সুব্রত এবং মণিরামপুর উপজেলার যুবলীগ নেতা উদয় শঙ্কর ও ফুলতলার মিলন হত্যাকান্ডে জড়িত। এসব মামলায় তাকে আটকে পুলিশ অভিযান শুরু করলে সে আত্মগোপনে ভারতে চলে যায়।
যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন, সম্প্রতি সাইফুল মেম্বর ভারতে ছিলেন বলে তথ্য মিলেছে। তিনি ভারতীয় মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। গত ২০ মে তিনি অবৈধ পথে বাংলাদেশে ফিরেছেন। তাকে আটকের পর এমপি আনার হত্যাকান্ডে তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/কেডি