চলতি বছর হজ মৌসুমে সৌদি আরবে অন্তত ১৩০১ জন হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ অননুমোদিত হজযাত্রী। তীব্র গরমে দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দেওয়ায় তারা মারা গেছেন।
এবার পুরো হজ মৌসুম জুড়েই দাবদাহ ছিল মক্কায়। প্রায় দিনই তাপমাত্রা ছিলে ৪৫ থেকে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এজন্য বেশিরভাগ হাজির মৃত্যু হয়েছে হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত অসুস্থতায়।
রোববার এসব তথ্য জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান ও এপির।
দেশটির মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মৃত হাজিদের ৮৩ শতাংশের হজে যাওয়ার সরকারি অনুমোদন ছিল না। ফলে অনুমোদন নিয়ে যাওয়া অন্যান্য হাজিদের মতো প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে কুলিং সিস্টেম, ঠান্ডা পানি ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার মতো সেবা গ্রহণ করতে পারেননি তারা। তীব্র তাপদাহে কোনোরকম আশ্রয় ছাড়াই তাদের হাঁটতে হয়েছে দীর্ঘপথ। এতে পথের মাঝেই প্রাণ হারান অনেকেই।
মৃতদের মধ্যে কেবলমাত্র মিশরীয় নাগরিকই রয়েছেন ৬৬০ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ৩১ জনের হজ করার সরকারি অনুমোদন ছিল। এ ঘটনায় মিশরের সরকার দেশটির ১৬টি ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করেছে- যারা সরকারি অনুমোদন ব্যতীত হজযাত্রীদের সৌদি ভ্রমণে সহায়তা করেছে। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১৬৫ ইন্দোনেশিয়ান, ৯৮ ভারতীয়, ৩৫ বাংলাদেশি, ২ মার্কিন নাগরিকসহ জর্ডান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়ার নাগরিকও রয়েছে।
দেশটির সরকারি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) তাদের অফিশিয়াল বার্তায় বলেছে, দুঃখজনকভাবে মৃতের সংখ্যা ১৩০১ এ পৌঁছেছে, যার ৮৩ শতাংশরই হজ করার জন্য অনুমোদন ছিল না। অবশ্য দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহাদ বিন আব্দুর রহমান আল-জালাজেল এ বছরের হজ ব্যবস্থাপনাকে ‘সফল’ বলে বর্ণনা করেছেন।
শুক্রবার রাতে বাংলাদেশের হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে জানানো হয়, এবার হজে গিয়ে সৌদি আরব ৩৫ জন বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও সাতজন নারী।
গত ১৪ জুন পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আরবি বর্ষপঞ্জিকার শেষ মাস জিলহজের ৮ তারিখ থেকে শুরু হয় হজ। ১৫ জুন সারাদিন আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন হজযাত্রীরা। পরের দিন ১০ জিলহজে পশু কুরবানি দেন হাজিরা। এরপর আরও দুদিন থেকে শেষ হয় হজ।
সৌদি পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বছর ১৮ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ হজ করেছেন। তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ১১ হাজার ৩১০ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৪ জন সৌদি ও প্রবাসী নাগরিক।
তবে এই বছর সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি হজে অংশ নেবেন বলেই আশা করেছিল সৌদি সরকার। শুরুর দিকে এমন তথ্যই দিয়েছিল সৌদি গণমাধ্যমগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত হাজিদের সংখ্যা ১৮ লাখ ছাড়াল।
খুলনা গেজেট/এনএম