খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেলের আগুন
  বিসর্জনে আজ শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব
মাত্র ৫৩৩ মেট্রিক টন রপ্তানি হয়েছে

এবার দুর্গোৎসবে ভারতে গেল রপ্তানি আদেশের মাত্র ২২ ভাগ ইলিশ

বেনাপোল প্রতিনিধি

দুর্গোৎসবে ভারতের বাঙালিদের ইলিশের স্বাদ দিতে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত দুই হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি আদেশ পেলেও শেষমেষ বেনাপোল দিয়ে গেল ৫৩৩ মেট্রিক টন ইলিশ। এবার সরকারের দেওয়া রপ্তানি আদেশের মাত্র ২২ ভাগ ইলিশ ভারতে গেল। সময় স্বল্পতা, বাজারে ইলিশ সংকট ও অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। শনিবার (১২ অক্টোবর) মধ্য রাত থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন কর্মকর্তা মাহবুুবুর রহমান বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৪৯ জন রপ্তানিকারককে দুই হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানিতে ছাড়পত্র দেন অন্তবর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৪৮ জনকে ৫০ মেট্রিক টন করে ও একজনকে ২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর রাত পর্যন্ত ৫৩৩ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ভারতে। যার রপ্তানি মূল্য ৫৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ৬৩ কোটি ৯৬ লাখ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২৩ সালে চার হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৪২ টন। এবারও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। প্রতিবারই এক শ্রেনীর ব্যবসায়ীরা রপ্তানির অনুমতি পেলেও মাছ রপ্তানি করেন না। তারাই আবার পরের বছর অনুমতি পেয়ে যান। জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতিবছর এ ঘটনা ঘটলেও দেখার কেউ নেই।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, ইলিশ চেয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অনুরোধ আর বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া অনুমতির মধ্যকার সময় স্বল্পতার কারণে পুরো ইলিশ রপ্তানি করা যায়নি। পূজা শুরুর পর ভারতীয় অংশে আমদানি বন্ধ এবং রপ্তানির জন্য হাতেগোনা মাত্র কয়েকটা দিন থাকায় ইলিশ রপ্তানিতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ বছরই কেবল নয়, বিগত পাঁচ বছরেও রপ্তানির অনুমতি পাওয়া পুরো ইলিশ পাঠানো যায়নি।

এদিকে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল যশোরসহ গোটা দেশের মানুষ। দেশের বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ ১৮শ’ থেকে দু’হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ভারতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১২শ’ টাকা কেজিতে। এটি কিভাবে সম্ভব তা নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অবশ্য ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র বলেছে, প্রকৃতপক্ষে ওই দরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে না। ইলিশ রপ্তানির খবরে বেনাপোলসহ আশপাশের এলাকার বাজারগুলোতে ইলিশ সংকট দেখা দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে লাগামহীন দাম বাড়ানোয় সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে রসনাবিলাস বাঙালির জাতীয় মাছ ইলিশ। চড়া দামের কারণেই মধ্য ও নিম্নবিত্ত মানুষের অধিকাংশের পাতে ওঠেনি ইলিশ।

ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সততা ফিসের রেজাউল জানান, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বেনাপোল থেকে সড়ক পথে ভারতে সব ধরনের পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকে। তবে শনিবার খোলা থাকে। অন্যদিকে রোববার আবার মাছ আমদানি বন্ধ রাখে ভারত। সপ্তাহের এই দু’দিন বাদ দিলে ২৬ অক্টোবর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১২ দিন ভারতে ইলিশ পাঠানোর সুযোগ পেয়েছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বাজারে ইলিশ সংকট ও অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবার প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ছিল ১০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ১৮০ টাকার সমান। কিন্তুু বাজারে এক হাজার ৮০০ টাকার নীচে মাছ কেনা যায়নি। তাছাড়া বড় বড় মোকামে মাছ সংকটও ছিল।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানান, ভারত ও বাংলাদেশ এই দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইলিশের এ চালান ছাড় করানো হয়। ১২ দিনে এ বন্দর দিয়ে ৫৩৩ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পাওয়া ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করতে পেরেছে। ২৯টি প্রতিষ্ঠান কোন ইলিশ মাছ রপ্তানি করতে পারেনি বলে তিনি জানান।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!