জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে নিলে ভোটার কার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এনআইডির কর্তৃত্ব চলে গেলেও নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় কোনো ক্ষতি হবে না বলে মনে করছে ইসি। কারণ এনআইডির ভিত্তিতে আমরা নির্বাচন করি না। আমরা নির্বাচন করি ভোটার তালিকার ভিত্তিতে। তবে ভোটার সার্ভার দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
ইসি আলমগীর ক্ষতি না দেখলেও এনআইডি সরকারের কাছে গেলে গণ্ডগোল হবে বলে মনে করছেন সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও এক কমিশনার। বুধবার ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এমন মন্তব্য করেন তারা।
সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও কে এম নূরুল হুদা এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
এনআইডির জন্য নতুন আইন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, এটি পাস হলেই এনআইডি নির্বাচন কমিশন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবে। আর জন্মের পরপরই নাগরিককে এনআইডি দেয়া হবে।
ইসি আলমগীর বলেন, ‘এনআইডি চলে গেলেও ভোটার সার্ভার দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা ইসির সম্পদ। আমাদের সার্ভার আমাদের কাছেই থাকবে। এই সার্ভার আমরা কারো কাছে হস্তান্তর করব না। এটা নিয়ে যারা বোঝে তারাও বলে, যারা না বোঝে তারাও বলে।
‘তবে আমরা তথ্য শেয়ার করতে পারি। এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলে গেলে তারা তথ্য ব্যবহার করতে চাইলে দেয়া যাবে।’
মো. আলমগীর বলেন, ‘এনআইডি চলে গেলে এটার নাম দেবো ভোটার আইডি। ভোটাররা আমাদের কাছ থেকে কার্ড পাবেন। এনআইডি তো কার্ড হিসেবে আমরা বানাইনি। আমরা বানিয়েছি ভোটার কার্ড হিসেবে।’
জাতীয় নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘নতুন করে কিনতে না পারলে যা আছে তা দিয়ে যতগুলো আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যায় ততগুলোই করবো।
‘পরিকল্পনা কমিশন যদি মনে করে আমাদের প্রস্তাবিত প্রকল্পের আর্থিক সক্ষমতা আছে, তারা যদি মনে করে পারবে তাহলে নতুন করে ইভিএম কেনা হবে। তবে জানুয়ারির মধ্যে এই প্রকল্প পাস হলে আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।’
গোপন কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ভোটাধিকার লঙ্ঘন- এমন অভিযোগের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, ‘আমরা গোপন কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা রাখিনি। কারণ এটা গোপন কক্ষ। কে কোন মার্কায় ভোট দিয়েছেন এটা দ্বিতীয় ব্যক্তির জানার সুযোগ নেই। সিইসি বা কমিশনার, কারো অধিকার নেই এটা জানার। যারা বলেছেন ঠিকই বলেছেন।
‘আমরা ক্যামেরা রেখেছি ভোটকেন্দ্রে। সেখানে দেখা গেছে অবৈধ ব্যক্তি ভোট দিয়ে চলে আসছে। কাকে ভোট দিয়েছে তা তো দেখিনি। এটা দেখার সুযোগ নেই। কেউ যদি এটা বলে থাকলে সেটা ভুল তথ্য।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণে অনিয়ম তদন্তে গঠিত কমিটি কাল হয়তো ফিরে আসবে। তারপর তারা রিপোর্ট দেবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।’