বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালিত হবে আজ সোমবার (৫ আগস্ট)। ফলে একদিন আগে থেকেই নানা জল্পনা-কল্পনায় রাত্রিযাপন করেছে সারাদেশের মানুষ।
এরকম দীর্ঘ রাত বাংলাদেশের বুকে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সোমবার (৫ আগস্ট) সকালেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
যেখানে এখন সরকার কী করতে পারে, সে বিষয়েও কথা বলেছেন এই নির্মাতা। ফারুকী মনে করেন, সরকার সেইফেস্ট এগ্জিট রুট নিয়ে একটা ইনটেরিম বডি’র কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারে।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফারুকী লিখেছেন, এরকম দীর্ঘ এবং ভারী রাত আসেনি বাংলাদেশের বুকে। আমি চিন্তিত। চিন্তিত এই প্রজন্মের সাহসী ছেলে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে যারা বাংলাদেশকে দুঃশাসন থেকে মুক্ত করে একটা গণতান্ত্রিক সমাজের দিকে এগিয়ে নিতে চায়।
নির্মাতা লেখেন, গোটা জাতি এইসব অচেনা ছেলেমেয়েদের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে কেনো জানেন? কারন তারাও গোপনে এটাই চাইছেলো। ফলে এইসব মুক্তি সেনার নিরাপত্তা আমাকে কালকে রাতে ঘুমাতে দেয় নাই। আমাকে ঘুমাতে দেয় নাই সরকার সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও। কোনো নৈরাজ্য আমাদেরকে ভালো কোথাও নিবে না। বাংলাদেশকে একটা গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া হলে এর চেয়ে বড় ট্র্যাজিডি আর কিছু হবে না।
এরপরই ফারুকী প্রশ্ন ছুঁড়ে লেখেন, এখন এটা ঠেকানোর উপায় কি? শুভ বুদ্ধির উদয়। সরকার যেটা করতে পারে সেইফেস্ট এগ্জিট রুট নিয়ে একটা ইনটেরিম বডি’র কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। আর আন্দোলনরত ছাত্র নেতৃত্ব যেটা করতে পারে, এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মাত্র সবাইকে আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে শান্তিপূর্ণ কিন্তু সজাগ অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানানো। সকল প্রকার প্রতিশোধমূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে স্পষ্ট আহ্বান জানানো।
এমনটা হলে পরবর্তীতে কার কী ভূমিকা, সে বিষয়েও লিখেছেন জনপ্রিয় এই নির্মাতা। ফারুকী যোগ করেন, মিলিটারির উচিত সাথে সাথে আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে প্রো-অ্যাকটিভ রোল নেয়া যাতে সব মত-পথ-ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। তারপর ইনটেরিম সরকার সমাজের সব স্টেকহোল্ডারের সাথে বসে “কমপ্লিট রিফর্মের” কাজে হাত দেয়া যাতে বাংলাদেশ আর কখনো এই রকম দুঃশাসনের কবলে না পড়ে।
তবে এর বাইরেও কোনো সমাধান থাকতে পারে। যেটা এখনই ফারুকীর মাথায় আসছে না। সেটা উল্লেখ করে এই নির্মাতা লেখেন, এর বাইরে কি অন্য কোনো সলু্শন আছে? হয়তো আছে যেটা আমার মাথায় আসছে না। আমি শুধু আশা নিয়ে তাকিয়ে আছি আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ গড়বো যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, লুটপাট থাকবে না, মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, আমাদের চিন্তা সেন্সর করবে না কেউ।
সবশেষ ফারুকী লিখেছেন, এই মুহুর্তে একটাই প্রার্থনা- শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে সংযুক্তি- সেইফ এগ্জিট বলতে সুনির্দিষ্ট অপরাধের বিচার না করার কথা বলিনি। তবে সেই বিচার কোনো মব জাস্টিস না হয়ে হতে হবে ফেয়ার জাস্টিস অ্যাট ফেয়ার কোর্ট।