যশোরের অভয়নগরে হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নানা সমস্যা ও সংকটে ঘুরপাক খাচ্ছে। এখানে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন ৬ জন ও গড় শিক্ষার্থী উপস্থিতি মাত্র ৫ জন। ৬ জন শিক্ষকের বেতন খাতে ব্যয় মাসে দেড় লক্ষাধিক টাকা। অথচ শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির কোন উদ্যোগ নেই কারো। কাগজে কলমে ভর্তিকৃত শিক্ষাথী আছে ১৩ জন। বিদ্যালয়ের আধা কিলোমিটারের মধ্যে আরো দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৪ জন। খাতা কলমে ১৩ জন ভর্তি শিক্ষার্থী। স্কুল চালু হওয়ার সময়ে মাত্র ২ জন শিক্ষিকা উপস্থিত রয়েছেন। পরে স্কুল শুরুর পর অপর শিক্ষক স্কুলে আসলেন। এ বছর শিক্ষা অফিস থেকে ২২ সেট বই উত্তোলন করা হয়েছে। অতিরিক্ত উত্তোলিত ৯ সেট বই সম্পর্কে শিক্ষকরা কিছুই জানেন না। উত্তোলিত বই শিক্ষা অফিসে ফেরত যায়নি বলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিশ্চিত করেন।
বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এক অভিভাবক জানান, গ্রাম্য কোন্দল থাকায় ও জন্মহার কমে যাওয়ায় শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন নেই ২ বছর ধরে। সরকারি কোন গ্রান্ড নেই। আধা কিলোমিটারের মধ্যে ফুলেরগাতি ও আড়পাড়া গ্রামে আরো ২ টি স্কুল রয়েছে। ফলে অভিভাবকরা ঔ দুটো ভাল মানের স্কুলে ছেলেমেয়ে ভর্তি করে। শিক্ষা অফিসের নজরদারীও কমে গেছে। বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলে ৪ জন ছাত্রছাত্রী উপস্থিত আছে। অন্যরা তেমন একটা স্কুলে আসেনা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ৩৪ বছর এই স্কুলে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এ বছরে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। পাশের বিদ্যালয়ের চলে গেছে। আরো একটি ক্লাসে ছাত্র শূন্য হতে চলেছে। বর্তমানে খাতাপত্রে ১ম শ্রেণিতে ১ জন, ২য় শ্রেণিতে ৩ জন, প্রাক শিশু শ্রেণিতে ৫ জন, ৩য় শ্রেণিতে আছে ৪ জন শিক্ষার্থী। ১৩ জনের মধ্যে এক শিক্ষিকার ১ জন সন্তান ভর্তি রয়েছে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সুচরিতা মন্ডল বলেন, শিক্ষার্থী যেমন নেই, তেমনই উন্নয়ন খাতে সরকারি বরাদ্দও নেই। বর্ষা মৌসুমে স্কুলের মাঠ কাদা ও পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বিদ্যালয়ের খেলার সরঞ্জাম মেরামত দরকার, কোন অর্থ নেই।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম জানান, অপ্রয়োজনীয় শিক্ষক অন্যত্র বদলী করা হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। তবে এক বছরের মধ্যে স্কুল উন্নয়নে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম আবু নওশাদ বলেন, আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি